বন্যার কারণে কিশোরগঞ্জের ১৫ গ্রামে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
কিশোরগঞ্জের ইটনা ও করিমগঞ্জ উপজেলায় উজানের পাহাড়ি ঢল আর টানা দুই দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় ১৫টি গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বন্যার কারণে দুটি উপজেলার ১৫টি গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এই ১৫ গ্রামে ১০ হাজার গ্রাহক রয়েছে। পানি কমে গেলেই আবার বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জেলার ইটনা ও করিমগঞ্জ হাওরের পানি বেড়ে যাওয়ায় চৌগাংগা ও নিয়ামতপুর অফিসের অধীন শান্তিপুর, চারিতলা, বালিয়াপাড়া, খাকশ্রী, সুতারপাড়া, বালিখলা, পাঁচকাহনিয়া, বড়িবাড়ি, এনসইলা, দিয়ারকান্দি, বাদলা, কুর্শি, শিমুলবাঁক, টিয়ারকোনা, চং নোয়াগাঁও এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে গত শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
চলমান বন্যা প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, গত শনিবার থেকে কিশোরগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এ পর্যন্ত জেলার আটটি উপজেলার ৫০টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় এ পর্যন্ত ১৪০ মেট্রিক টন রিলিফের চাল, নগদ আড়াই লাখ টাকা সহায়তাসহ শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে অতিরিক্ত আরও দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বন্যার্তদের সহায়তায় জেলার সবকটি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যেই চার হাজার ৮৯৬ জন বন্যাদুর্গত মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। তাদের শুকনো খাবার প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া ২৬৫টি গবাদি পশু আশ্রয় কেন্দ্রে আছে। সব মিলিয়ে এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কিশোরগঞ্জের হাওরের সব জায়গায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। হাওরের প্রবাহিত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গত শনিবার রাতে তিন ফুট বাড়লেও গতকাল রোববার পানিবৃদ্ধির হার ছিল কম। তবে পানি বেড়ে যাওয়া অব্যাহত থাকলে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।