বিএনপির হাত ধরেই দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে : ওবায়দুল কাদের
বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বললেও দলটির নেতাকর্মীরা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপির হাত ধরেই এ দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে।’ বিএনপি নির্বাচন নিয়ে কোন মুখে কথা বলে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
আজ রোববার (৩০ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একদিকে বলছেন, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। অন্যদিকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিএনপি নেতাকর্মীরা আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছে। বিএনপির এই দ্বিমুখী আচরণের কারণে জনগণ তাদের ওপর আস্থা হারিয়েছে। জনগণ দ্বারা বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি নেতারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণে ভয় পায়। একইসঙ্গে তারা নির্বাচন ও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারায় লিপ্ত থাকে। বিএনপি আজ নির্বাচন নিয়ে কথা বলে কোন মুখে? বিএনপির হাত ধরেই এদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। সামরিক শাসন জারি রেখে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ/না ভোট, সেনাপ্রধানের দায়িত্বে থেকে ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছিল। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন করেছিলেন। তাদের সময়ে অনুষ্ঠিত মিরপুর ও মাগুরা উপনির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক ঘটনা হিসেবে স্থান পেয়েছে।’
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল দাবি করেন, আওয়ামী লীগ না কি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারসহ ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সুদীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নিশ্চিতভাবে বিএনপির কাছ থেকে গণতন্ত্রের পাঠ নেবে না।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিএনপির চর্চিত গণতন্ত্রে বিশ্বাস বা আস্থা রাখে না। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষকে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিল। গণতন্ত্রের লেবাসে সামরিক স্বৈরতন্ত্রের ভূত এ দেশের জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল। বিএনপি এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে, মানুষের ভোটাধিকারকে বারবার বাধাগ্রস্ত করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং যে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে জনগণের হৃদয়ের অনুরণন প্রতিফলিত হয় তা প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর।’
বিবৃতিতে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পথকে মসৃণ করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। সফল রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকার কারণে বর্তমানে শেখ হাসিনাকে সমীহের দৃষ্টিতে দেখেন বিশ্বের সব নেতারা। শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণেই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশের সব স্তরের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধন জোরদার হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছে। যা দেখে বিএনপি ও তার দোসরদের গাত্রদাহ হচ্ছে। তাই তারা এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এসব ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে এবং কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না, ইনশাল্লাহ।’