ময়মনসিংহের সেই শিশুকে হাসপাতালের ছাড়পত্র, ছোটমণি নিবাসে ঠাঁই
ময়মনসিংহের আলোচিত সেই শিশুকে ছাড়পত্র দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছাড়পত্র দিয়ে শিশুটিকে একজন সমাজসেবা কর্মকর্তার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাজধানীর সরকারি ছোটমণি নিবাসে।
ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মায়ের পেট ফেটে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুটিকে চিকিৎসা শেষে আজ হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহর কাছে বুঝিয়ে দেন। এ সময় শিশুটির দাদা মুস্তাফিজুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
শিশুটি বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ। এর আগে ১৮ জুলাই রাতে বেসরকারি লাবিব হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মমেক হাসপাতালের নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয়। শিশুর চিকিৎসায় গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যদের মেডিকেল বোর্ড। বোর্ডের সচিব মমেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম শিশুর চিকিৎসার দেখভাল করেন। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ শিশুটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এর আগে ১৬ জুলাই দুপুরে ত্রিশালে সড়কে ট্রাকচাপায় মারা যায় শিশুর মা-বাবা ও বোন। এ সময় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশুটি অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে যায়।
এদিকে, পরিবারের সম্মতিতেই শিশুটিকে আজিমপুরের ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিশুর দাদা মুস্তাফিজুর রহমান। ময়মনসিংহ সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক
মো. ওয়ালীউল্লাহ বলেন, ‘শিশুটির বাবা-মা কেউ নাই। দাদা অস্বচ্ছল। তাই, ময়মনসিংহ শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিশুটিকে ঢাকার ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়েছে। সেখানে পরিবারের লোকজন তাকে দেখতে যেতে পারবে। দুবছর শিশুটি সেখানে থাকবে।’
এদিকে ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। তার হাড়ে ফ্র্যাকচার (চিড়) আছে। (তবে) সেটি আপনাআপনি ভালো হয়ে যাবে। তাই, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিশুটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।’
শিশুটিকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে জেনে গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও দর্শনার্থীরা শিশু ওয়ার্ডে ভিড় করেন। ছোটমণি নিবাসে শিশুটির মঙ্গল কামনায় তার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তার দাদা মুস্তাফিজুর রহমান।