যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে সব করা হবে : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতিতে সরকারের দায়মুক্তি দেওয়া এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মতের নাগরিকদের দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ‘বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদন’ প্রকাশ করেছে, সেটিকে ভ্রান্ত ও ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি বলে অভিহিত করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টটি আমরা পর্যালোচনা করছি। বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রান্ত ধারণা কাটিয়ে ওঠার জন্য যা যা করা দরকার, আমরা তা করব।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন সম্পর্কে এসব কথা বলেন।
প্রতিবেদনের কয়েকটি দিক তুলে ধরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৭৪ পৃষ্ঠার রিপোর্টটি পর্যালোচনা করে এখন পর্যন্ত যা দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে—রোহিঙ্গা ইস্যুটিও ভুলভাবে মার্কিন রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে এলজিবিটিদের (লেসবিয়ান, সমকামী, রূপান্তরকামী) জন্য বাংলাদেশে আইন নেই এবং বাংলাদেশ তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারছে না, এমন কথাও বলা হয়েছে। অথচ এলজিবিটি আমাদের ইসলাম ধর্মের পরিপন্থি। পৃথিবীর এমন একটা মুসলিম দেশ নেই, যেখানে এলজিবিটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। আমার জানামতে কোনো ধর্মই এটি অনুমোদন দেয়নি। যত দেশ বা সংস্থা থেকে চাপ আসুক না কেন, এলজিবিটি প্রশ্নে কোনো ছাড় দেবে না বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বিরোধিতা করা হবে, ধর্মের সঙ্গে বিরোধিতা করা হবে’, বলেন শাহরিয়ার আলম।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের বিষয়েও ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। ১০/১২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচর থেকে পালানোর সময় নৌকাডুবিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এটাও কি আমাদের দোষ? আমাদের ঘাড়ে এ দোষ চাপানো হয়েছে। অথচ রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি মানবিক।’
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সাজা দেওয়া হয়েছে এ প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘প্রতিবেদনের এ তথ্যও সঠিক নয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে নির্বাহী আদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে দেশে ও বিদেশে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রতিবেদনটি ওইসব তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা গতানুগতিক একটি প্রতিবেদন।’