শহীদ দিবসে নেতাকর্মীদের উপর হামলার নিন্দা বিএনপির
২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাণ্ডব চালিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রী কার্যালয়ে আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ অভিযোগ করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে শ্রদ্ধ নিবেদনের সময় ঢাকা মহানগরী উত্তর বিএনপির বিমানবন্দর থানা, দক্ষিণ খান থানা, শাহআলী থানা, রূপনগর থানার প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের উপর পেছন থেকে আওয়ামী ছাত্রলীগ, যুবলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা আক্রমণ করে। এতে ২০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শুধু তাই নয়, লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা স্থানীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ হামলা চালায়। এতে আহত হয়েছেন ছাত্রদল সভাপতি শাহরিয়ার ফায়সাল, পৌরসভা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুলসহ ১৫ জনের অধিক নেতাকর্মী। আহত নেতাকর্মীদের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করলে সেখানেও হামলা চালায় তারা। তাৎক্ষণিক তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
রিজভী বলেন, গতকাল বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোটেক বিলকিস জাহান শিরিন এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নানুর উপস্থিতিতে ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন চলাকালীন পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ যৌথভাবে হামলা চালিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয়।
বিএনপির সাবেক এ ছাত্রনেতা বলেন, আওয়ামী সরকার 'জয়বাংলা-ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। ভাষাশহীদ দিবসেও তাদের নারকীয় তাণ্ডব অব্যাহত আছে। আওয়ামী সহিংসতার কীর্তি পত্রিকার প্রথম পাতাজুড়ে প্রকাশ পেলেও সরকার ভ্রূক্ষেপহীন। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতাদের আশকারাতেই জাতীয় পর্যায় থেকে জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতারা এসব তাণ্ডব চালচ্ছে। জাতিকে নিষ্প্রাণ নিস্তেজ করার জন্যই এসব করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ এক ভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি নির্মাণ করতে চাচ্ছে, এই সত্যটি এখন দেশবাসী মর্মে মর্মে অনুভব করছে। নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি বিপন্ন করে এরা এক আজ্ঞাবাহী সংস্কৃতির জন্ম দিতে যাচ্ছে। তারই আলামত চারদিকে ফুটে উঠেছে।
বিভিন্ন স্থানে হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এই দিনেও আওয়ামী লীগ রক্ত ঝরাতে দ্বিধা করল না। এরা এখন এতটাই বেপরোয়া যে, বিরোধী স্বর শুনলেই নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরা জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে বলেই সন্ত্রাস, হামলা, আক্রমণকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এরা গণতন্ত্রকামী জনগণকে দাবিয়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে।
আওয়ামী লীগকে নাৎসি সরকারের সঙ্গে তুলনা করে রিজভী বলেন, ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই সরকার উৎখাতই এখন আমাদের প্রধান কর্তব্য। জনগণের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে অবিলম্বে এই সরকারের পতন না ঘটাতে পারলে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা ভয়াবহভাবে বিপন্ন হবে।