সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। আজ বুধবার (৮ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে একটি ভবন সাততলা, আরেকটি ভবন পাঁচতলা। এর মধ্যে সাততলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়।
ঘটনার পর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ব্র্যাক ব্যাংকের ভেতরে আটকে থাকা এক ব্যক্তিকে উদ্ধারকারীরা বের করে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণে বিকট শব্দ। ভেতরে সবাই আমরা হতভম্ব হয়ে গিয়েছি। সবাই যতটা সম্ভব ভেতরের দিকে গিয়েছি। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে আমাদের ভেতর থেকে বের করে নিয়ে আসে।’
বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন—নোয়াখালী সোনাইমুড়ীর নদী (৩৫) ও তাঁর স্বামী মমিনুল (৩৮), বংশাল সুরিটোলার সুমন (২১), যাত্রাবাড়ীর শেখদির মনসুর হোসাইন (৪০), কেরানীগঞ্জ চুনকুটিয়ার রাহাত (১৮), চাঁদপুর মতলবের আল আমীন (২৩), কলাবাগান গ্রিন রোডের ইশহাক মৃধা (৩৫), বংশাল আলু বাজারের ইসমাইল (৪২) এবং কদমতলী মাতুয়াইলের মাইনুদ্দীন (৫০), হৃদয় (২০), ইদ্রিস মিয়া (৬০), আবৃত্তি বেগম (৭০), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), নাজমুল হোসেন (২৫) এবং সম্রাট।
ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো থেকে ৪০ জনকে জীবিত উদ্ধার
গতকাল ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছিলেন। রাত ১১টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবন থেকে ৪০ জনকে জীবিত উদ্ধার করেন বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন জানিয়েছেন। তিনি জানান ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় রাতে উদ্ধার কাজ বন্ধ করা হয়েছে।
আর ঢামেক হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, এ বিস্ফোরণে মৃত ১৭ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। আরেকজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোতে উদ্ধার অভিযান চালানোর উদ্দেশে প্রস্তুতি নিচ্ছেন উদ্ধারকারী দলগুলো। এ সময় ভবনে আটকে থাকা ব্যক্তিদের স্বজনরা আশপাশে ভিড় করেন ও ভেতর থেকেেআটকেপড়াদের উদ্ধার করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে বিপুল ফায়ার সার্ভিস কর্মী, পুলিশ ও র্যাব সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আজও অনেক উৎসুক মানুষকে সেখানে ভিড় করতে দেখা গেছে।