সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি : হাইকোর্ট
‘দুদকের চামড়া ছিঁড়ে ফেলব’ চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনলে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
হাইকোর্ট বলেন, ‘আমরা সবাই কেমন যেন অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছি। সিভিল সোসাইটির একজন মানুষ, তার মন্তব্য সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর হওয়া উচিত ছিল।’
এসময় আদালতে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘আপনারা তার কাছে ব্যাখ্যা চান।’ তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘যেহেতু মামলা হয়েছে এটা নিয়ে দুদকই কাজ করুক।’
‘চামড়া সব ছিঁড়ে ফেলব, মাইজভান্ডারীর গায়ে হাত!’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, “দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। তিনি বলেন, ‘দুদক নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে চেনে নাই। যা তা কমেন্ট করছেন সহকারী পরিচালক। চামড়া সব ছিঁড়ে ফেলব। মাইজভান্ডারীর গায়ে হাত!”
গত সোমবার রাতে মাইজভান্ডারী শাহি ময়দানে সৈয়দ শফিউল বশর মাইজভান্ডারীর ১০৪তম খোশরোজ শরিফ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তরীকত ফেডারেশনের নেতা নজিবুল বশর এ হুঁশিয়ারি দেন। তার বক্তব্যের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পরে।
প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগে নজিবুল বশরের দুই ছেলেসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তার এ দুই ছেলে হলেন তরীকত ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভান্ডারী ও সৈয়দ আফতাবুল বশর।
এ বিষয়ে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য নজিবুল বশর। বক্তব্য দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি যা বলেছি, সত্য বলেছি। একটাও মিথ্যা বলিনি। ৪০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ৬৫ কোটি টাকা ফেরত দিলে আত্মসাৎ কীভাবে হয়। সেটা তারা মামলায় উল্লেখ করেননি। এছাড়া ট্যাক্স ফাইলেও ওই টাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। তাহলে কীভাবে টাকা পাচার হয়?’
নজিবুল বশর আরও বলেন, ‘আমি দুদকের বিরুদ্ধে রিট করব। পাশাপাশি তাদের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলব। কারণ, হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। দুদক কী করছে? দুদক আমাকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস কোথায় পেল? নিশ্চয় কারও ইন্ধন থাকতে পারে।’