হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার কাদের মির্জার, সকাল পর্যন্ত আল্টিমেটাম
জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও পরিদর্শককে (তদন্ত) প্রত্যাহারের দাবিতে হরতাল, অবরোধ কর্মসূচি সাময়িক প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
গতকাল মঙ্গলবার রাতভর কোম্পানীগঞ্জ থানা অবরোধ করে রাখার পর আজ বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন দাবিতে উপজেলার সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে পৌর মেয়রের সমর্থকরা সেখানে হরতাল পালন করে। এতে উপজেলা শহরে সব যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। যানবাহনের অভাবে যাত্রীদের বিপাকে পড়তে হয়।
দুপুর ১২টার দিকে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বসুরহাট পৌরসভার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বলেন, থানা থেকে ওসির বের হয়ে যাওয়ার জন্য সেখান থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমার দাবি অনুযায়ী ফেনীর সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালীর এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর অপরাজনীতি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি, পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল হককে প্রত্যাহার এবং চরকাঁকড়ার আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম ওরফে সবুজকে গ্রেপ্তার করতে হবে।’
সব দাবি মানা না হলে আমাগীকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ফের হরতাল পালন করা হবেও জানান মেয়র কাদের মির্জা। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার সারাদিন থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। লাগাতার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এদিকে, হত্যা করা হতে পারে—এমন আশঙ্কা করে গতকাল মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জ থানায় নিজে বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন আবদুল কাদের মির্জা।
সূত্র জানায়, অজ্ঞাতস্থান থেকে ফেসবুক লাইভে এসে তাঁকে গালিগালাজ করলে চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এরপর পুলিশ ওই নেতাকে আটক করে পরে আবার ছেড়ে দিলে আবদুল কাদের মির্জা ক্ষুব্ধ হয়ে থানার সামনে গতকাল রাত থেকে অবরোধ শুরু করেন। আজ সকাল থেকে তিনি হরতালের ডাক দেন।
এরপর ফেনী-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক, কোম্পানীগঞ্জ-মাইজদী সড়ক, চাপরাশিরহাটসহ সব সড়কের ওপর গাছের গুড়ি, বাঁশ ও বাস আড়াআড়ি করে রেখে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। হরতালের কারণে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যায়। বাইরে থেকে কোনো যানবাহন কোম্পানীগঞ্জে ঢুকতে পারেনি। সকাল থেকে চলা কর্মসূচির কারণে যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা ঘটায় রাস্তায় মানুষকে বিপাকে পড়তে দেখা গেছে। অনেককে পরিবার-পরিজন নিয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা যায়।
আজকে সকালে রাজপথে থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মেয়র অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে, তাঁর পরিবারের সদস্য ও সমর্থকদের হত্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য ৫০ কোটি টাকার ফান্ডও করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বসুরহাটের মেয়র দাবি করেন, এসবের সঙ্গে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা জড়িত। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজ, রাহাত, রবিউল প্রমুখের গ্রেপ্তারের দাবির পাশাপাশি নোয়াখালীর অপরাজনীতি বন্ধের দাবিও জানান।