রাজীব গান্ধীর বাসা থেকে গিয়েই আর্টিজানে হামলা!
রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার সময় বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় পরিবারসহ অবস্থান করছিলেন হামলার ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী। আর ওই বাসাটিকেই ‘অপারেশনাল হাউস’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। হামলার দিন ওই বাসা থেকেই বের হয়ে হলি আর্টিজানে যান পাঁচ হামলাকারী।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
মনিরুল ইসলাম জানান, গুলশান হামলার আগে থেকেই বসুন্ধরা এলাকার ওই বাসায় পরিবারসহ বসবাস করছিলেন রাজীব। ওই বাসাটিকেই তাঁরা অপারেশনাল হাউস হিসেবে ব্যবহার করতেন। গুলশান হামলার দিনেও রাজীব ওই বাসায় ছিলেন। হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা করার উদ্দেশে পাঁচজন হামলাকারী তাঁর ‘অপারেশনাল হাউস’ থেকে বের হলে রাজীব তাঁর পরিবার নিয়ে ওই বাসা থেকে সরে পড়েন। পরে পরিবারসহ মিরপুরের শ্যাওড়াপাড়া এলাকার একটি বাসায় অবস্থান নেন তিনি।
রাজীব গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরীর অন্যতম সহযোগী ছিলেন বলেও জানান মনিরুল। তিনি জানান, গুলশান হামলার পর জুলাই মাসের শেষের দিকে পুলিশ সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে পুলিশকে ভয় দেখানোর একটা পরিকল্পনা তৈরি করেন তাঁরা।
এর আগে, ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সারা দেশে চালানো সিরিজ বোমা হামলার অন্যতম সমন্বয়কারী হিসেবে বগুড়া আস্তানার দায়িত্বে ছিলেন আব্দুল আওয়াল। গ্রেপ্তার রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীর আলম তখন আব্দুল আওয়ালের সঙ্গে তাঁর পাচক হিসেবে কাজ করতেন। সেই সঙ্গে সে সময় জেএমবির বড় নেতাদের নির্দেশ অনুযায়ী সাইকেলে করে বিভিন্ন জায়গায় গোপন চিঠি পৌঁছে দেওয়ার কাজটিও করতেন তিনি। মূলত সেই ২০০৪ সাল থেকেই জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন এই রাজীব গান্ধী।
রাজীব গান্ধীর বাবার ওসমান গনি এবং মা রাহেলা বেগম। তাঁর বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার ভুতমারী ঘাট এলাকায়।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে টাঙ্গাইল থেকে রাজীবকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট।
গত বছরের পয়লা জুলাই রাত ৯টার দিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালান বন্দুকধারীরা। হামলার পর রাতেই তাঁরা দেশি-বিদেশি ২০ জনকে হত্যা করেন।
ওই দিন রাতে উদ্ধার অভিযানের সময় বন্দুকধারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরের দিন সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী ও রেস্তোরাঁর এক কর্মী।
ওই হামলায় মোট ২৯ জন নিহত হন। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে।
সংগঠনটির মুখপাত্র আমাক হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স।