আপনি মিথ্যা সাক্ষ্য দিলেন, সাক্ষীকে তাহমিদের আইনজীবী
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া তাহমিদ হাসিব খানের আইনজীবী মতিউর রহমান সাক্ষী কনস্টেবল মনির হাসেনকে বললেন, ‘আপনি সাজানো মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য দিলেন।’
আজ ঢাকার মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসানের আদালতে দুপুর পৌনে ২টায় আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীকে এ কথা বলেন।
একই মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) সাইদুর রহমানও সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বিচারক আগামী ১৪ মার্চ এ সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন। এদিন আদালতের কাঠগড়ায় তাহমিদ হাসিব খান হাজির ছিলেন।
আইনজীবী সাক্ষীকে প্রশ্ন করে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আপনি কি ছিলেন?’ জবাবে সাক্ষী বলেন, ‘না।’
আইনজীবী ফের প্রশ্ন করে বলেন, ‘তাহমিদকে যে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল, তখন আপনি সেখানে ছিলেন?’ জবাবে সাক্ষী বলেন, ‘না।’ এ পর্যায়ে আইনজীবী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মনির হোসনকে বলেন, ‘আপনি সাজানো মামলায় আদালতে মিথ্য সাক্ষ্য দিলেন।’ জবাবে সাক্ষী বলেন, ‘সত্য নহে।’
এ মামলার অপর আইনজীবী মো. মাসুদ আরিফ ভূঁইয়া হানিফ এনটিভি অনলাইনকে জানান, এ মামলায় মোট সাতজন সাক্ষ্য দিলেন। তাহমিদের পক্ষে আদালতে হাজিরা দেওয়া হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছরের ৩ আগস্ট হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ৫৪ ধারা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর পরই তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশকে অসহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়।
১০ জানুয়ারি ঢাকার মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসান এ মামলায় তাহমিদের বিচার শুরুর আদেশ দেন।
গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকের একটি বাসা থেকে রাত ৯টার দিকে তাহমিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর তাঁকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
এজাহার থেকে জানা যায়, ১ জুলাই রাত ৯টার দিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। হামলার পর রাতেই তারা ২০ জনকে হত্যা করে। ওই দিন রাতে উদ্ধার অভিযানের সময় বন্দুকধারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরের দিন সকালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী ও রেস্তোরাঁর এক কর্মী।
এ নিয়ে হামলার পর ২৮ জন নিহত হয়। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির মুখপাত্র আমাক হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স।
এ ঘটনায় এক ভারতীয় নাগরিকসহ নয় ব্যক্তি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে বিভিন্ন সময়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক সাক্ষ্য দেন। অন্যদিকে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম, কল্যাণপুরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় আটক রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ও রাজীব গান্ধীকে গুলশান হামলা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।