‘দুর্বিষহ অবস্থা লাঘবে সরকারের উদ্যোগ নেই’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামে সংঘটিত ভয়াবহ পাহাড়ধসে মাটিচাপায় নিহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ, প্রতিদিনই মৃত্যুতালিকা দীর্ঘ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘অথচ সরকারের পক্ষ থেকে পাহাড়ধসে মানুষের মৃত্যু ও উপদ্রুত এলাকার মানুষদের দুর্বিষহ অবস্থা লাঘবে কোনো উদ্যোগ নেই। ভয়াবহ জনদুর্ভোগ দূরীকরণে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপই নেই।’
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি জানান, বৃহত্তর চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে মানুষের মৃত্যুতে তাঁদের আত্মার মাগফিরাত এবং গুরুতর আহত মানুষদের সুস্থতা কামনায় আগামীকাল শুক্রবার ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে দেশব্যাপী মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজের পর বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
রিজভী বলেন, ‘পাহাড়ি বানে বাঁধ ভেঙে পানিতে ভেসে যাওয়া বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। বাড়ি-ঘর, সহায়-সম্বল হারিয়ে উপদ্রুত হাজার হাজার মানুষ এখন অসহায় অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে কোনোমতে বেঁচে থাকার জীবনযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে।’
রিজভী আরো বলেন, ‘কত মানুষ যে এখনো নিরুদ্দেশ হয়ে আছে তার কোনো হদিস নেই। দ্রুত, তাৎক্ষণিক ও সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে উপদ্রুত এলাকায় অসহায় মানুষকে রক্ষা করতে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষুধা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের অভাবে উপদ্রুত এলাকায় ভয়াবহ মানববিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।’
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, বর্তমান আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় এসেছে দেশের উন্নয়ন ও জনকল্যাণের জন্য নয়, তারা ক্ষমতায় এসেছে শুধুমাত্র ক্ষমতা ভোগ-উপভোগ করতে। রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী নাটকের আত্মবিমোহিত রাজার মতো চারদিকের দুর্যোগ দুর্বিপাকে এই সরকার থাকে উদাসীন ও নির্বিকার।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী সরকারের ক্ষমতায় থাকা আর জনগণের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে না। আর সে জন্য সারা দেশ যদি ভয়াবহ যে কোনো বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত হয়ে যায় তাতে তাদের আনন্দভ্রমণ বন্ধ থাকে না। ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী দেশ ও জনগণের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা হারিয়েছে। আর সে জন্য এখন থেকে তারা তাদের আত্মীয়স্বজনকে ভিন দেশের নাগরিক বানিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত করছেন এবং তাদেরকে সেখানেই রাজনীতি করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। দেশের প্রতি তাদের মন ও ভালোবাসা তিরোহিত হয়ে গেছে বলেই এখন তারা শুধুমাত্র অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা আগলিয়ে রেখে অগণতান্ত্রিক, দুর্বিনীত ও অশুভ কর্মকাণ্ডেই মেতে আছে। আর এ কারণেই জনগণ যখন ভয়াবহ দুর্যোগের মধ্যে নিপতিত হয়, যখন অসংখ্য প্রাণহানি ঘটে, সহায়-সম্বলহীন আহত মানুষদের আর্তনাদ যখন চারিদিকে ধ্বনিত হয়, তখন আওয়ামী লীগের নেতারাই পারে বনভোজনের ম্যুডে বিদেশ সফর করতে। বাংলাদেশের জনগণের কোনো বিপদে কখনোই পাশে থাকেনি আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ আত্মসম্মানহীন এক নিপীড়ক শক্তি ছাড়া আর কিছুই নয়।’