বুলেট-স্প্লিন্টারের আঘাতেই গুলশানের ৫ জঙ্গির মৃত্যু!
রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় কমান্ডো অভিযানে নিহত পাঁচ হামলাকারী এবং একজন বাবুর্চি বুলেট ও স্প্লিন্টারের আঘাতে নিহত হয়েছিলেন। তাঁদের শরীরে কোনো উত্তেজক ওষুধ বা মাদকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। এর আগে দুপুর পৌনে ২টার দিকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।
ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘পাঁচজন মারা গেছে। সেই পাঁচজনের সবার শরীরেই গুলির আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি আমরা। এবং দুজনের শরীরে আমরা বোম্ব ব্ল্যাস্টের আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। একজনের বাম হাত পুরোটা উড়ে গেছে, আরেকজনের গালের পুরো অংশটা পুড়ে গেছে এবং উড়ে গেছে। এই দুইটা পেয়েছি আমরা বোম্ব ব্ল্যাস্ট এবং তাদের শরীরে গুলিরও আঘাত ছিল। আর বাকি যে চারজন ছিল, সবার শরীরে গুলির আঘাতের জন্য এরা মারা গেছে।’
নিহত পাঁচ জঙ্গি হলেন মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। নিহত আরেকজনের নাম সফিউল ইসলাম চৌকিদার, তিনি ওই রেস্তোরাঁয় বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন।
গত বছরের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানের রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে সন্ত্রাসীরা। সেখানে উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন।
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির মুখপত্র আমাক হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স। যদিও সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইএসের এই দাবি অস্বীকার করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, হামলায় নিহত জঙ্গিদের সবাই নব্য জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের সদস্য।
হামলার প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ২ জুলাই সকালে রেস্তোরাঁয় ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ পরিচালনা করে যৌথ বাহিনী। এরপর সেখান থেকে ২৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এঁদের মধ্যে নয়জন ইতালীয়, সাতজন জাপানি, তিনজন বাংলাদেশি ও একজন ভারতীয়। বাকি ছয়জন হামলাকারী বলে জানায় সেনাবাহিনী।
জঙ্গি হামলার পর ৪ জুলাই রাতে গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন।