গাজীপুরের সিটি মেয়র এম এ মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করে তাঁকে বরখাস্ত করে। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা নাশকতার মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।urgentPhoto
এম এ মান্নান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। গত ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকার বারিধারার বাসভবন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে বন্দি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) সহকারী সচিব নেজামুল জানান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (সিটি করপোরেশন-২ শাখা) সহকারী সচিব এ কে এম আনিছুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এম এ মান্নানকে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। আদেশের কপি আজ বুধবার দুপুরে মন্ত্রণালয় থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে পাওয়া গেছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, এম এ মান্নানের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর থানায় দায়ের করা ফৌজদারি মামলা নম্বর [১০৪(১২)১৪] জি.আর নম্বর ১৫৭১/১৪ এ অভিযোগপত্র গাজীপুর জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে গত ১২ মে গৃহীত হয়েছে। যেহেতু স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ধারা ১২-এর উপধারা (১) মোতাবেক সিটি করপোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে; সেহেতু গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে উল্লেখিত ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বড়বাড়ী এলাকায় সাংবাদিক বহনকারী একটি মাইক্রোবাস এবং একটি যাত্রীবাহী লেগুনা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাংবাদিক এম এ ফরিদ বাদী হয়ে মেয়র এম এ মান্নান, জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলনসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১৫-২০ জন বিএনপির নেতাকর্মীর নামে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্তের পর পুলিশ এম এ মান্নান, ফজলুল হক মিলনসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। গত ১২ মে ওই মামলার অভিযোগপত্র গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারজানা খানের আদালতে গৃহীত হয়।
চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরের সার্ডি গেট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএসের নিজ বাসা থেকে এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার পর থেকে তিনি আদালতের নির্দেশে কারাগারে রয়েছেন। এ পর্যন্ত ১০টি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এসব মামলার প্রায় সবগুলোই গত জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতালকালে গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, নাশকতা, বিস্ফোরক ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দানসহ বিভিন্ন আইনে করা হয়েছে। এরই মধ্যে দুটি মামলায় এম এ মান্নানের নামে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে। তাঁর অবর্তমানে গত ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন।