তদন্ত চলায় এ মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না : হাইকোর্ট
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত চলমান রয়েছে। এসব তদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন উপস্থাপন করলে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিকালে আদালত বলেন, আমরা তো এই হত্যা মামলার তদন্তে সরকারের অবহেলা দেখছি না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এ মামলা মনিটরিং করছেন। সেই সঙ্গে পিবিআইয়ের তদন্তও সঠিকভাবে হচ্ছে। কাজেই এ অবস্থায় তাদের কাজে কোনো ব্যাঘাত যেন না ঘটে, তাই হস্তক্ষেপ করতে চাই না।
এ বিষয়ে ইউনুস আলী আকন্দ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, হাইকোর্ট বলেছেন, এ বিষয়ে সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, দেখি কী হয়। এ মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না। আপনিও এ বিষয়ে পড়াশুনা করে আসেন।
গত ১৭ এপ্রিল নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ রিট করেন। রিটে নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
নুসরাত হত্যা মামলাটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচার করা, তাঁর পরিবারকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং মামলাটি র্যাবকে দিয়ে তদন্ত করতেও রিটে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া রিটে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলা, নারায়ণগঞ্জের ত্বকী, কুমিল্লার সোহাগী জাহান তনু এবং সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার অগ্রগতি আদালতকে জানানোর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) মোট পাঁচজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতের সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা তাঁর বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে এমন সংবাদ দিলে- ওই ভবনের ছাদে যান নুসরাত। সেখানে বোরকা ও নেকাব পরা চার-পাঁচজন তাঁকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত।