দুই আসামি ছিল স্বাভাবিক, লোকজনের কিল-ঘুষি
খুলনায় শিশু রাকিব হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামি রায় ঘোষণার পর ছিলেন স্বাভাবিক। রায় শোনার পর তাঁদের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে তাঁদের আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় পুলিশের পাহারার মধ্যেই ক্ষুব্ধ লোকজন কিল-ঘুষি দেন।
আজ রোববার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলরুবা সুলতানা আসামি মো. শরিফ ও তাঁর চাচা মিন্টু খানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার রায় দেন। তবে মামলার অপর আসামি বিউটি বেগমকে খালাস দেওয়া হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে আদালতের বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রাকিবের পরিবার, এলাকাবাসী ও উপস্থিত মানুষ।
বিচার কার্যক্রম শেষে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামিকে কারাগারে নেওয়ার জন্য আদালত থেকে বের করা হলে সেখানে উপস্থিত মানুষ পুলিশ পাহারার মধ্যে মো. শরিফ ও মিন্টু খানকে কিল-ঘুষি দেন। এ ছাড়া উত্তেজিত লোকজন ওই দুজনকে আরো পিটুনির জন্য পুলিশের পিছু পিছু তাড়া করতে থাকে। তবে দুই আসামির চারপাশে পুলিশের ব্যারিকেড বাড়িয়ে দ্রুত তাদের প্রিজন ভ্যানে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় রাগে-ক্ষোভে প্রিজন ভ্যানের গায়ে বাড়ি মারতে থাকে উপস্থিত লোকজন।
একপর্যায়ে রাকিবের একমাত্র ছোট বোন রিমি প্রিজন ভ্যানের সামনে দাঁড়িয়ে বিউটি বেগমের ফাঁসির দাবিতে চিৎকার করতে থাকে। সে তার ছোট হাত দিয়ে পুলিশের গাড়ি আটকে দেওয়ার চেষ্টাও করে। এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা এসে তাকে সরিয়ে দেন।
গত ৩ আগস্ট খুলনা মহানগরের টুটপাড়ার একটি গ্যারেজে শিশু রাকিবকে ধরে নিয়ে তার মলদ্বারে কমপ্রেসারের হাওয়া দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন শিশু রাকিবের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। এর আগে ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী পিটুনি দিয়ে মো. শরিফ ও মিন্টু খানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ পরে বিউটি বেগমকে আটক করে। খুলনা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী মোশতাক আহমেদ তদন্ত শেষে গত ২৫ আগস্ট মামলায় তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ১১ অক্টোবর থেকে এ মামলায় টানা ৩৮ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ এ মামলার রায় দেওয়া হলো।