‘ফাঁসি চাই’ স্লোগানে কাঁপল আদালত
গণমাধ্যমের কারণে দেশের মানুষের কাছে জানা ছিল আজকের দিনটি সম্পর্কে। বিশেষ করে সিলেটের বাসিন্দাদের কাছে তো অবশ্যই। আজ ৮ নভেম্বর রোববার সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালত রাজন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ঘাতকরা নির্যাতনের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করে রাখে। ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেই দেশজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ। পলাতক আসামি কামরুল ইসলামকে ধরে আনা হয় সৌদি আরব থেকে।
সিলেটের আদালত ভবনে আজ সকাল থেকেই ছিল ভিড়। বিশেষ করে বেলা ১১টার দিকে আদালত চত্বরে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। ঠিক ওই সময়ে আসামিদের বহনকারী নীল গাড়িটি (প্রিজন ভ্যান) আদালত চত্বরে প্রবেশ করে।
গাড়িটি থেকে প্রথমেই নামানো হয় প্রধান আসামি কামরুল ইসলামকে। তখনই শুরু হয় উচ্চ স্বরে স্লোগান, ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই।’ একে একে নামানো হয় ১১ জন আসামিকে। আসামিদের আদালত ভবনে নিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশ কর্মকর্তাদের। আদালত চত্বরে তখন গগনবিদারী স্লোগান, ‘ফাঁসি চাই।’
আগেই চলে আসা রাজনের স্বজনরা আদালত ভবনের বারান্দা থেকে এ দৃশ্য দেখছিলেন। স্বজনদের কয়েকজন অঝোরে কাঁদছিলেন।
রাজনের মা লুবনা আক্তার ছিলেন স্থির। শোকে পাথর হয়ে যাওয়া কঠিনভাবটা এখনো স্পষ্ট। রায় শুনে তিনি বলেন, ‘যখন আমি দেখব এদের ফাঁসি হয়েছে, যখন বাংলার মানুষ দেখবে এদের ফাঁসি হয়েছে। তখন আমি খুশি হবো।’
রাজনের বাবা শেখ আজিজুল আলম, ‘রায়ে আমি সন্তুষ্ট। কিন্তু রায় কার্যকর হলে আমার ছেলেটার আত্মা শান্তি পাবে। আর কোনো মায়ের কোল যেন এভাবে খালি না হয়।’
রায় ঘোষণার পর দুপুর সোয়া ১টার দিকে আসামিদের গাড়িতে ওঠানো শুরু হয়। গন্তব্য কারাগার। কিন্তু সিঁড়ি দিয়ে নামতে, গাড়ি পর্যন্ত যেতে আবারও মানুষের ভিড় সামলাতে হয় পুলিশকে। ভিড় সামলানো গেলেও সাধারণ মানুষের স্লোগান সামলানো যায়নি। উচ্চ কণ্ঠে সবাই একই কথা বলে, ‘ফাঁসি চাই। এদের ফাঁসি চাই।’