নির্বাচনী পরিবেশের অবনতি হয়েছে : বিএনপি
গত এক সপ্তাহে নির্বাচনী পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
আজ রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী
রকিব উদ্দিন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। সাক্ষাৎ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান এ অভিযোগ করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন গত এক সপ্তাহে নির্বাচনী আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। গত কয়েকদিনে বিরোধী দলের প্রার্থী ও কর্মীদের ওপর
হামলা, ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে।’
আর এসব কর্মকাণ্ড সরকারি দল করছে অভিযোগ করে আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের যে পরিবেশ ছিল তা গত এক সপ্তাহে অবনতি হয়েছে। নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে এসে আমরা আবারও ইসিকে বলেছি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে।’
ইসির কর্মকাণ্ডে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করছেন কি না জানতে চাইলে এর সরাসরি উত্তর না দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আমরা মনে করি, জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এ আশা করা যায়। আমরা চাই, ভোটের সু্ষ্ঠু পরিবেশ ও সঠিক ফলাফল।’
বিএনপি ‘ব্লেইমের’ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে আব্দুল মঈন খান আরো বলেন, ‘আজকে আমরা ব্লেইম দিলাম, কালকে আরেক দলকে ব্লেইম দিল- আমরা এটার পরিবর্তন চাই।’
আওয়ামী লীগ ১০ নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘কোন সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করল, কী করল না এটা বড় বিষয় নয়। বিষয় হলো ভোট সমালোচনামুক্ত রাখা। যেসব সংস্থা দক্ষ অভিজ্ঞ ও গ্রহণযোগ্য তারা যেন পর্যবেক্ষণ করতে পারে এমন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’
বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে আব্দুল মঈন খান বলেন, দেশের ও জনগণের স্বার্থে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিরোধী দল না থাকলে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয় না। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে রাজনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। এটা সরকার ও দেশের জন্য কল্যাণকর হবে না।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি— আমরা ইসির কাছে কোনো দাবি নিয়ে আসিনি। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এসেছি। আমরা ইসির সমালোচনা করার জন্য নয়, আমরা চাই প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী হোক— সেই ব্যবস্থা করা উচিত।’
আজকেও সেনাবাহিনীর মোতায়েনের দাবি জানানো হয়েছে কি না, এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এটা আমাদের সাইকোলজিক্যাল একটা বিষয়ও। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে একজন ভোটারের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় ভোটটা দিতে পারবে কি না, তাকে ভোট দিতে দিবে কি না। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই আমরা সেনাবাহিনী
মোতায়েনের দাবি রেখেছি।’
প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল হালীম, ক্যাপ্টেন সুজাউদ্দিন, দলের যুগ্ম মহাসচিব খন্দকার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন।