কুমিল্লায় দুই শিশু হত্যায় সৎভাইয়ের জবানবন্দি
কুমিল্লায় দুই শিশুকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন নিহতদের সৎভাই সফিউল ইসলাম ছোটন।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টার কিছুক্ষণ আগে কুমিল্লার ৯ নম্বর আমলি আদালতে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সাইফুল ইসলামের কাছে ছোটন জবানবন্দি দেন।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আইয়ুব আলী জানান, জবানবন্দিতে ছোটন তাঁর দুই সৎভাই শিশু জয় ও মনিকে একাই শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেন। যেহেতু ছোটন সব দায়দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন সেহেতু পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করেনি। পরে আদালত তাঁকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শিশু জয় ও মনিকে হত্যার দুইদিন পর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ ও কুমিল্লা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গতকাল সোমবার রাতে যৌথ অভিযান চালিয়ে ঢাকার মালিবাগে টুইন টাওয়ারের সামনে থেকে ছোটনকে গ্রেপ্তার করে। আজ বিকেলে তাঁকে কুমিল্লা আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে আজ সকালে ছোটনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। পুলিশ সুপার মো. আবিদ হোসেন জানান, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঢুলীপাড়ার দক্ষিণ রসুল এলাকার বাসিন্দা আবুল কালামের দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে ও তিন মেয়ে। এর মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছেলে সফিউল ইসলাম ছোটন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএতে পড়েন। ছোট মেয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রথম স্ত্রী তাবলিগ জামাতের সাথী হয়ে বিভিন্ন স্থানে দাওয়াতের কাজ করেন। আর দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে মেহেদী হাসান জয় (৯) ও মেজবাহুল হক মনি (৬) নামের দুই ছেলে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছোটনকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি।
পুলিশ সুপার জানান, ছোটন জানিয়েছেন, তাঁর বাবা আবুল কালাম ১০ বছর আগে তাঁর মাকে রেখে আরেকটি বিয়ে করেন। এরপর থেকেই তাঁর বাবা ও সৎমা তাঁদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ শুরু করেন এবং তাঁর লেখাপড়ার খরচ কমিয়ে দেন। সর্বশেষ জানতে পারেন, তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্ছিত করা হবে। এসব ক্ষোভের কারণে তিনি গত শনিবার ঢাকা থেকে কুমিল্লার বাড়িতে গিয়ে তাঁর ছোট দুই সৎভাই জয় ও মনিকে একাই রশি দিয়ে বেঁধে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। এরপর ঢাকায় চলে আসেন।