ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ৫৭ জেলে
ঘনকুয়াশায় পথ হারিয়ে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকেছিলেন ৫৭ জেলে। সাজা হিসেবে তিন মাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আলীপুর কারাগারে ছিলেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার ওই ৫৭ জন ফিরেছেন মাতৃভূমি বাংলাদেশে।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই জেলেদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়। আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাঁদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে।
ফেরত আসা এসব জেলেদের নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। তাঁদের খাবার পানি ও ওষুধপত্র দিয়ে প্রাথমিক সহায়তা দেওয়া হয়।
ফেরত আসা কয়েকজন জেলে সাংবাদিকদের জানান, দিনের বেলায় সাগরে ঘন কুয়াশার মধ্যে ট্রলারের দিক হারিয়ে ফেলেছিলেন তাঁরা। ভাসতে ভাসতে কখন যে তাঁরা ভারতীয় জলসীমায় চলে যান, তা বুঝতেই পারেননি। ভারতের কোস্টগার্ড সদস্যরা তাঁদের ধরে নিয়ে যান।
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কৈখালীর সীমান্ত নদী কালিন্দীর জিরো পয়েন্টে বিজিবি ও বিএসএফ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দুই দেশের পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ করে। ফেরত আসা জেলেদের মধ্যে ৫৩ জন কক্সবাজারের কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার, তিনজন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার। একজন নোয়াখালীর। বিএসএফ তাঁদের ট্রলার দুটিও ফেরত দিয়েছে।
বিজিবির সুবেদার জসিম জানান, ফেরত আসা জেলেদের বয়স ২০ থেকে ৫০ বছর। তাঁরা সবাই সুস্থ আছেন।
বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মামুন জানান, গত ১৬ নভেম্বর ৫৭ জন জেলে দুটি বড় আকারের মাছধরার ট্রলার নিয়ে কক্সবাজার থেকে সাগরে নামেন। প্রায় সাতদিন ধরে সাগরের বাংলাদেশ জলসীমায় থাকার পর ঘনকুয়াশায় তাঁরা পথ হারিয়ে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে পড়েন। এ সময় ভারতীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাঁদের আটক করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ফেজারগঞ্জ থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে তাঁদের কলকাতার আদালতে তোলা হলে প্রত্যেকের তিন মাস করে সাজা হয়। এর পর থেকে তাঁরা আলীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক ছিলেন।
মেজর মামুন জানান, বিষয়টি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে আসার পর সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়। এর জেরে দেশে আনা হয়।
কালিন্দী নদীর মধ্যসীমায় নৌকায় বসে জেলে হস্তান্তরের সময় ছিলেন ভারতের হেমনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ চ্যাটার্জি ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুর রহমান। তাঁরা কাগজপত্রে দুই দেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন। এ সময় সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর আবদুল্লাহ আল মামুন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-৩ ব্যাটালিয়নের ডেপুটি কমান্ড্যান্ট সুরিন্দর কুমার, শমসেরনগর বিএসএফের এসি গিরিশ চন্দ্র, কৈখালী বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার জসিম, ভারতীয় কোস্টগার্ডের ওসি আবু হাসান প্রমুখ।