এসপির স্ত্রী হত্যা : সাবেক ‘শিবিরকর্মী’ গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের জিইসি মোড় এলাকায় পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় জড়িত সন্দেহে আবু নসর গুন্নু নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ রোববার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য।
সিএমপির এ কর্মকর্তা জানান, সকালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফরহাদাবাদ এলাকা থেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সক্রিয় কর্মী আবু নসর গুন্নুকে গ্রেপ্তার করে সিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, আবু নসর গুন্নু বিদেশে চলে গিয়েছিলেন। বিদেশ থেকে আসার পর তিনি মাজারে ছদ্মবেশে থাকতেন। সীতাকুণ্ড থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যার দুটি মামলা রয়েছে।
সিএমপির এই কর্মকর্তা জানান, মিতু হত্যায় শুধু তিনজন নয়, আরো অনেকেই অংশ নিয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের পেছনে আরেকটি কালো রঙের মাইক্রোবাস ছিল। তিনি জানান, গত ৮ মে মোটরসাইকেলটি চুরি হ্য়। এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এ মোটরসাইকেলের মালিক শহীদুল্লাহ বাবুর্চিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
জানা গেছে, আবু নসর ফরহাদাবাদে মুসাবিয়া দরবার শরিফের এন্তেজামিয়া কমিটির সেক্রেটারি এবং নাজিরহাট কলেজিয়েট উচ্চবিদ্যালয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধি।
এ ব্যাপারে ফরহাদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া জানান, মুসাবিয়া দরবার শরিফ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষের বিরোধ চলছে। একটি পক্ষে পরিবারের বড় মেয়ের শামসুন্নুরুন সিদ্দিকীর স্বামী তৈয়ব উল্লাহ সিদ্দিকী। অন্যপক্ষে ছোট মেয়ে হমিদুন্নেসা। বড় জামাতার পক্ষে ছিলেন আবু নসর। এর পরিপ্রেক্ষিতে নসরকে হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত করা হতে পারে বলে তাঁর ধারণা।
ইদ্রিস মিয়া আরো জানান, আবু নসর বিগত ইউপি নির্বাচনে ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের কোরআনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তাঁর কেন্দ্রসচিবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
জামায়াত শিবিরের সঙ্গে আবু নসরের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে মাজার কর্তৃপক্ষও। তৈয়ব উল্লাহ সিদ্দিকীর মেয়ে খায়রুননূর সিদ্দিকী বলেন, তাঁর ছোট খালা হমিদুন্নেসা পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মাজার কমিটির সেক্রেটারি আবু নসরকে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। গতকাল দিবাগত রাত ১টার দিকে মাজার এলাকা থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
গত রোববার সকাল পৌনে ৭টার দিকে চট্টগ্রামের ব্যস্ততম এলাকা জিইসি মোড়ে ছুরিকাঘাতের পর গুলি করে হত্যা করা হয় চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। এ সময় পাশেই ছিল তাঁদের ছেলে মাহির। তাকে স্কুলবাসে তুলে দিতেই বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মাহমুদা।
এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বাদী হয়ে তিন মোটরসাইকেল আরোহীসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।