সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তথ্য বিনিময় গুরুত্বপূর্ণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সফররত দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়ালকে বলেছেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে তথ্যবিনিময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আজ সোমবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে নিশা দেশাই বিসওয়াল সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন বলে বার্তা সংস্থা বাসসের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সম্প্রতিক হামলার উল্লেখ করে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, জনগণের সহযোগিতায় বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে সক্ষম হবে। তিনি বিসওয়ালকে বলেন, জনগণ এখন অনেক সচেতন। সরকার সমাজে শিক্ষিত বিত্তবানদের সন্তানদের জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে এবং এ ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিএনপি-জামাত সরকারের সময়ে দেশের ৬৩টি জেলায় ৫০০ স্থানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে। তিনি বলেন, তবে অপরাধীরা ঠিকই আইনের আওতায় এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন কর্মকর্তাকে তাঁর সরকারের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা খুব অল্প সময়ে নিয়ন্ত্রণে এনেছে। শেখ হাসিনা তাঁর জীবনের ওপর বারবার আসা হুমকির কথা উল্লেখ করে বলেন, তিনি নিজেই সন্ত্রাসী ঘটনার শিকার এবং কয়েকবার এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা মোকাবিলা করেছেন।
সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুবকদের সম্পৃক্ততার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক তরুণ বছরের পর বছর নিখোঁজ রয়েছে। অনেক স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ জন্য সরকারকে অভিযুক্ত করছে। অনেক তরুণ এখন বিদেশে লেখাপড়া করতে গিয়ে নিজেই লুকিয়ে আছে। অথচ মানবাধিকার সংগঠনগুলো গভীরে না গিয়ে সরকারের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তরুণরা ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নয়, কৌতূহলের বশে এ ধরনের ঘটনায় সম্পৃক্ত হচ্ছে।’
বৈঠকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল বলেন, মার্কিন সরকার সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
বৈঠকে নিশা দেশাই মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, তাঁরা কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া ব্লুম বার্নিকাট, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।