পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত ‘পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে’(৩০০ ফুট) প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী পদক্ষেপ ‘পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প’যা ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় অনুমোদন পায়।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে।
রাজধানীর সঙ্গে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ ঘটাবে পূর্বাচলের ১২.৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় এক্সপ্রেসওয়ে। এই প্রকল্পটিতে কুড়িল হতে বালু নদী পর্যন্ত ৫.৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ৮ লেন বিশিষ্ট এক্সপ্রেসওয়ে ও ৬ লেন বিশিষ্ট সার্ভিস রোড এবং বালু নদী হতে কাঞ্চন পর্যন্ত ৬.৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬ লেন বিশিষ্ট এক্সপ্রেসওয়ে ও ৬ লেন বিশিষ্ট সার্ভিস রোড রয়েছে।
উল্লেখ্য, কুড়িল হতে কাঞ্চন পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পাঁচটি অ্যাটগ্রেড ইন্টারসেকশন নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায় কুড়িল হতে কাঞ্চন পর্যন্ত সড়কের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দৃষ্টিনন্দন ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া কুড়িল হতে কাঞ্চন পর্যন্ত ১২.৩০ কিলোমিটার সড়ক ও খালের উভয় পাশের তিন মিটার প্রশস্ত ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজও সম্পন্ন করা হবে।
রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রশস্ত এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশে ১০০ ফুট চওড়া খাল খননের মাধ্যমে বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গতিশীল হবে। এছাড়া এই প্রকল্পে কুড়িল হতে বালু নদী পর্যন্ত খালের উভয় পাশের উত্তর দক্ষিণ বরাবর ১৩টি সেতু ওভার ক্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এই সড়কে নয়টি লাইনে ও গ্রিন জোনে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১.৫০ লাখ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। আশা করা যায়, আকর্ষণীয় পরিবেশের কারণে এটি হবে সৌন্দর্য্য ও ভ্রমণ পিপাসুদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য বর্ষা মৌসুমে কুড়িল, বারিধারা, বারিধারা ডিওএইচএস, ঢাকা সেনানিবাস, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান অনুযায়ী ডুমনী, বোয়ালিয়া ও এডি-৮ খাল বহমান রাখা ও ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এছাড়া ভবিষ্যতে ঢাকা শহরের ক্রমবর্ধমান ট্রাফিক ও কুড়িল হতে কাঞ্চন পর্যন্ত অবস্থিত আশপাশের এলাকাসমূহের নগরায়ণের কথা চিন্তা করে বিদ্যমান রাস্তার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। পাশাপাশি ট্রাফিক চলাচল নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে ব্রিজ ও অ্যাটগ্রেড ইন্টারসেকশন তৈরি করা এবং খালের সংরক্ষণ ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখাও এই প্রকল্পের বিশেষ উদ্দেশ্য। পাশাপাশি প্রকল্পটি নগরীর সৌন্দর্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত করবে।