‘সব নেতাকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব’ প্রসঙ্গে যা বলল বিএনপি
ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন। চলছে ক্ষণগণনা। ইতোমধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন আজ রোববার (১৭ ডিসেম্বর) শেষ হয়েছে। আগামীকাল সোমবার দেওয়া হবে প্রতীক বরাদ্দ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের জোটভুক্ত দলের মধ্যে চলছে আসন ভাগাভাগি। আর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো। যদিও বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সব ধরনের চেষ্টা হয়েছে, এমনকি গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদেরও ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব ইসি থেকে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। সেই প্রস্তাবও তারা ফিরিয়ে দিয়েছে। যদিও এমন তথ্য ‘জানি না’ বলে মন্তব্য করেছন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আর মঈন খান বলেছেন, তারা গণতন্ত্র ফেরাতে মাঠে আছেন, আসন ভাগাভাগি করে নির্বাচনের জন্য নয়।
বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে আসছে মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এমনকি, জাতিসংঘও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় বলে জানিয়েছে।
নির্বাচনে যখন প্রতীক বরাদ্দের নাকের ডগায়, তখন দেশের একটি বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রতিবেদককে বলেন, ‘২০ হাজার নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করলে কি বাংলাদেশে আজকে গাড়ি চলতেছে, আজকে এই হরতালের দিন গাড়ি দেখতেন? এ ছাড়া আমাদের কোনো গত্যন্তর ছিল না। কোনো অল্টারনেটিভ ছিল না। যেটাই করেছি, আমরা চিন্তা-ভাবনা করে করেছি।’
নির্বাচনে বিএনপিকে আনার প্রশ্নে আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘বারবার বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে—তারা যদি নির্বাচনে আসে তবে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে। শুধু পিছিয়ে দেওয়া না, বলাও হয়েছিল—সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাদেরকে জেলে না রাখলে দেশ অচল হয়ে যাবে।’ সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সংবিধান সমুন্নত রেখে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতেই নির্বাচনে বদ্ধপরিকর আওয়ামী লীগ। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে আওয়ামী লীগের চেষ্টার কমতি নেই।
সব নেতাকর্মীদের জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটা আমার জানা নেই। উনার (ড. আবদুর রাজ্জাক) কথাতেই প্রমাণ হয়, বিএনপি নেতাদের নামে যে মামলা হয়, এগুলো মিথ্যা বানোয়াট। রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্যই এসব মামলা হয়।’
আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিএনপি আসন ভাগাভাগির জন্যে আন্দোলন করছে না, বরং বিএনপির এই আন্দোলন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।’ বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘বলাই বাহুল্য, আওয়ামী লীগের তরফ থেকে এই বক্তব্য তথা বিএনপিকে নির্বাচনে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব; বিএনপির এই প্রতীতিকেই সত্য প্রমাণিত করেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো অবস্থাতেই কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না, বরং তারা একটি প্রহসনের সাজানো নির্বাচনে বদ্ধপরিকর।’
‘বারবার বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে—তারা যদি নির্বাচনে আসে তবে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হবে। শুধু পিছিয়ে দেওয়া না, বলাও হয়েছিল—সবাইকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে’ বলে কৃষিমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তুলে ধরে আজ রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের কাছে জানতে চাইলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা এমন কথা বলিনি।’