বড় সন্তানকে নিয়ে জাপান গেলেন নাকানো এরিকো
আপিল বিভাগে শুনানির জন্য স্থিতিশীল থাকাবস্থায় বড় সন্তান জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে জাপানে গেছেন জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো। গত ৯ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টায় এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যান। সেখান থেকে পরে তিনি জাপানে চলে গেছেন। জাপানি শিশুদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফ এমন অভিযোগ করেছেন।
আজ সোমবার (১৫ এপ্রিল ) শুনানির আগে ইমরান শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের স্থিতাবস্থা থাকার পরও নাকানো এরিকো আদেশ অমান্য করে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন জাপানি শিশু জেসমিন মালিকা (বড়) ও তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে। মেজ মেয়ে লাইলা লিনা তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে। তবে ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। একইসঙ্গে পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু ৯ এপ্রিল বিকেলে নাকানো এরিকো বড় সন্তানকে নিয়ে জাপানে চলে যান।
আদেশ অমান্য করার অভিযোগে নাকানো এরিকোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেছেন শিশুদের বাবা ইমরান শরীফ। চেম্বার আদালতে আজ এই আবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে। আদালত আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন। ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তা সত্ত্বেও বড় সন্তানকে নিয়ে নাকানো এরিকো চলে গেছেন। এ কারণে আমরা আদালত অবমাননার আবেদন করেছি।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন জাপানি শিশু জেসমিন মালিকা (বড়) ও তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা নাকানো এরিকোর কাছে থাকবে। মেজ মেয়ে লাইলা লিনা তাদের বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে বলে রায়ে বলা হয়। রায়ে বলা হয়েছে, প্রথম ও তৃতীয় মেয়েকে নিয়ে জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো বাংলাদেশে বা যেকোনো দেশে বসবাস করতে পারবেন। তবে বাবা সন্তানদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাবেন। একইভাবে দ্বিতীয় মেয়ে লাইলা লিনা বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবেন। তবে জাপানি মা দ্বিতীয় মেয়ের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।
এ বিষয়ে আপিল আংশিক মঞ্জুর করে সেদিন বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে ঢাকার জেলা জজ আদালত বাংলাদেশে থাকা জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইনা লিনা জাপানি মায়ের কাছে থাকবে বলে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন ইমরান শরীফ।
গত বছরের ৯ মার্চ জাপানি দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে বিদেশে নিয়ে যেতে জাপানি মায়ের আবেদন নাকচ করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুই শিশু কার জিম্মায় থাকবে এ সংক্রান্ত আপিল জেলা জজ আদালতকে তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আদালত। এ সময় পর্যন্ত দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা যেভাবে আছেন সেভাবেই থাকবে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।