রাজধানীতে দফায় দফায় সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ২১
কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তার আশেপাশে এ সংঘর্ষের সাংবাদিকসহ ২১ জন আহত হয়েছেন। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া এনটিভি অনলাইনকে আহতদের চিকিৎসার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাচ্চু মিয়া জানান, ঢাকা মেডিকেলে এ পর্যন্ত সাংবাদিকসহ ২১ জন জরুরি বিভাগের চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে দুজনকে ভর্তির কথা বলেছেন চিকিৎসক। অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন।
আহত সাংবাদিকরা হলেন, সাবিব (৩৩), জীবন (২৫), সোলাইমান (২৬), তারেক (২৫)। তারা চারজন টিএসসির রাজু ভাস্করদের সামনে আহত হন।
একটি বেসরকারি টিভির ক্যামেরামান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, একটি ককটেল এসে তার মাথায় পড়েছে। ভাগ্যক্রমে মাথায় হেলমেট ছিল। তাই বেঁচে গেছি। অপর এক সাংবাদিক বলেন, হঠাৎ করে একটি সাউন্ড গ্রেনেড আমার বাম হাতের ওপর বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আমার পেটে জখম ও বাম হাতের চামড়া পুড়ে গেছে। বর্তমানে জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা চলছে।
অন্য আহতরা হলেন—কাউসার (২০), মো. অলিউল্লাহ (২৭), মো. নাঈম (২৪), মো. সাইদুল ইসলাম (২৬), মো. ইকবাল হোসেন (৪০), মো. সোহান (২৮), লিমন (১৫), মিজান (২০), ফেরদৌস (৪০), মিরপুর রূপনগর থানা আওয়ামী মহিলা লীগের কর্মী কবিতা (৪৫), নাসরিন (৪৮), রহিমা (৫০) ও কুমিল্লা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ল’ কলেজের শিক্ষার্থী নাদিম উদ্দিন খোকন (২৭), জুরাইনের ছাত্রলীগকর্মী কৌশিক হাসান বিজয় (২৩), মো. মাসুদ (২১), মো. হাবিব (২২) ও জুরাইন ইউনিট আওয়ামী লীগের মো. রিপন (৩৯)।
এরপরও উত্তপ্ত ঢাবি। সেখানে পুলিশি বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। মাহমুদুল নামে এক শিক্ষার্থী জানান, বিকেল ৪টার দিকে গায়েবি জানাজা শুরু হয়। জানাজা শেষে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ছয়জনের জন্য দোয়া কামনা করা হয়। দোয়া শেষে ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি ভিসি চত্বর থেকে একটু এগোলেই পুলিশ মিছিলে সাইন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এরপর মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা কলাভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা আবার ভিসি চত্বরের দিকে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয় এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
আরও অনেকে জানান, পুলিশি বাধা এলে শিক্ষার্থীরাও দুই একটি ইট-পাটকেল ছোড়েন। আবার শিক্ষার্থীরা দৌড় দিয়ে সরে যান। পরে আবারও শিক্ষার্থীরা ভিসি চত্বরে আসেন এবং পুলিশকে উদ্দেশ করে বলতে থাকেন, গো ব্যাক, গো ব্যাক। সে সময় অনেক শিক্ষার্থী একই সুরে স্লোগান দিতে থাকেন। তখন পুলিশ আবার সাইন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। টেয়ার শেল নিক্ষেপ করে। আর শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন।