পুলিশের মনোবল ও কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ : আইজিপি
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেছেন, ভেঙে পড়া পুলিশের মনোবল ও কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনা এখনও বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেটে মহানগর পুলিশের হেডকোয়ার্টারের কনফারেন্স রুমে বিভাগের সকল ইউনিটের পুলিশ কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে আইজিপি একথা বলেন।
আইজিপি বলেন, গত ১৫ বছরে পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে পুলিশ এত অপরাধ করেছে যে ক্ষমাপ্রার্থনা ও দুঃখপ্রকাশ করা ছাড়া কোনো পথ নেই। এছাড়া পুলিশের ওপর জনরোষের পুরোটাই গেছে এসআই, কনস্টেবলদের ওপর। কর্মকর্তারা কেউ মারা যাননি, কনস্টেবল বা এসআইদের ক্ষোভ আছে। তারা যেসব দাবি জানিয়েছেন তার বেশিরভাগই যৌক্তিক।
এসময় সিলেটে পুলিশের গুলিতে নিহত সাংবাদিক তুরাব হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারকে অনুরোধ করেন আইজিপি।
আইজিপি বলেন, বর্তমানে ভয়ে-আতঙ্কে পুলিশের মন ভেঙে গেছে। গণঅভ্যুত্থানে সিনিয়র পুলিশ সদস্যরা জুনিয়রদের হুকুম দিয়ে তাদেরকে অনিরাপদ রেখে পালিয়ে গেছে। বিগত সময় পুলিশ দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে, এ জন্য আমরা লজ্জিত।
আইজিপি বলেন, পরিবর্তিত পরিবেশে মামলার ক্ষেত্রে অসাধু ব্যক্তিরা সুবিধা নিয়েছে। অনেকে বাণিজ্য করছেন। এদের মধ্যে আবার কেউ সমাজের বড় নেতাও। তবে আমরা কথা দিচ্ছি- নিরীহ যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে না। বরং নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, তাদের খুঁজে বের করে তদন্তকারী কর্মকর্তা যেন অভয় দেন, আশ্বস্ত করেন।
গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, হুমকি ও চাঁদাবাজির বিষয়ে আইজিপি বলেন, আপনাদের কাছে কেউ চাঁদা চাইতে এলে কাউকে চাঁদা দিবেন না, ভয়ও পাবেন না। আমরা সব সময়ই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আছি।
পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা কমিশনে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় সুপারিশ করেছি। বিশেষ করে বেশিরভাগ পুলিশ সদস্যকে ওভারটাইম কাজ করতে হচ্ছে। এটার জন্য তারা কোনো ভাতা পান না। এই বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি তাদের কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনতে আমরা তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
মতবিনিময় সভায় র্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহিদুর রহমান, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিমসহ পুলিশের সকল দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।