ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে একজনের মৃত্যু, অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চরাঞ্চলে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে সেতাব আলী (৪৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র, ৮ রাউন্ড গুলিসহ দুই ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ইসলামপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল্লাহ সাইফ বিষয়টি জানান।
ওসি জানান, ইসলামপুরের কুলকান্দি ইউনিয়নের জিগতলা গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সাত্তার ডাকাতের ছেলে ইসমাইল (৩২), তাঁর ভাই ইসা নবী (৪২), শুক্কুর আলী (৩৮), সুরত আলী (৪২), সুলতানসহ (৩৮) একদল ডাকাত জিগাতলা এলাকায় অবস্থান করে ইসলামপুর ও পাশের গাইবান্ধার ফুলছরি, সাঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকার জমি দখল, খুন, ডাকাতি, চুরিসহ প্রকাশ্যে অপকর্ম করে আসছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ডাকাতদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জিগাতলা এলাকাবাসীসহ পাশের এলাকার লোকজন দেওয়ানগঞ্জ আর্মি ক্যাম্প, পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, র্যাব, ফুলছড়ি, সাঘাটা থানা এলাকায় অভিযোগ জানিয়ে আসছিল। অপরাধীদের আস্তানার এলাকাটি দুর্গম এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দীর্ঘ দিনেও অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করতে পারেনি। দেশের রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর সচেতন এলাকাবাসী বর্তমান পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুলকান্দি ইউনিয়নের যমুনার দুর্গমচর জিগাতলা বালুরটিলা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালায়। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই ডাকাতরা টের পেয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় জিগাতলা এলাকার ইসমাইল ও সুরমান আলীকে আটক করে পুলিশ। তবে এর আগেই গণপিটুনিতে আহত হয় তারা। অন্যরা কৌশলে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়।
ওসি আরও জানান, পুলিশ আটক করা দুজনকে নিয়ে আসার সময় খবর পেয়ে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা সেতাব আলী নামে এক ডাকাতকে গণপিটুনি দেয়। পুলিশ গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ডাকাত ইসমাইল গুরুতর আহত হওয়ায় জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অভিযানে পুলিশ ডাকাতদের কাছ থেকে সক্রিয় একটি শুটারগানসহ আট রাউন্ড গুলি ও একটি ছোরা উদ্ধার করে।
ওসি বলেন, নিহত ডাকাতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটককৃতদের নামে পুলিশ বাদী হয়ে একটি ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা এবং অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও খুনের অভিযোগে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।