সচিবালয়ের সামনে থেকে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আশ্বাস পেয়ে শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্ত নেন। তবে আগামী বুধবার অনুষ্ঠেয় মন্ত্রণালয়ের সভায় এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখতে ‘শাটডাউনের’ ঘোষণা দেন তারা।

আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সচিবালয়ের সামনে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব।

এসময় রাকিব বলেন, ‘বুধবার মন্ত্রণালয়ের সভায় প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হবে বলে আশ্বাস পেয়েছি। এ ছাড়া অস্থায়ী আবাসনের বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের তিনটি দাবির মধ্যে দুটি মেনে নেওয়া হয়েছে। তাই আমরা অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।’

দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর, অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিত করা এবং অস্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা দেওয়ার দাবিতে গতকাল রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা।

আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে সচিবালয়ের দিকে রওনা হন শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৫টার দিকে তারা সচিবালয়ের সামনে পৌঁছান। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সচিবালয়ের সামনে অবস্থানের ঘোষণা দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘লজ্জা লজ্জা, ইউজিসি ইউজিসি’, ‘অনশন চলছে চলবে, ‘কবে দিবা ক্যাম্পাস’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, এমন নানা স্লোগান দেন।

যে তিন দাবি নিয়ে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে সই করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ বৈঠকের মাধ্যমে তা শেষ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালি সবার সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকা অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না।

২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু ও শেষ করতে হবে।

৩. যতদিন পর্যন্ত আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এই কার্যক্রম আরও সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। বৈঠকে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে। এরপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমাদের দাবির অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।