সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য আসছে ডিজিটাল ঋণ
দেশের সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক দেবে ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ। একশ কোটি টাকার এই ঋণ প্রকল্পের আওতায় অর্থায়নকারী ব্যাংকগুলো গ্রাহককে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা দিতে পারবে। ছয় মাস মেয়াদী এই ঋণের বিপরীতে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই আর্থিক খাত উন্নয়নের জন্য সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনকে বিবেচনায় নিয়ে আর্থিক পণ্য বা সেবা বহুমুখীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস), ই-ওয়ালেট ইত্যাদি ব্যবস্থা ব্যবহার করে ইন্ড টু ইন্ড (ঋণ প্রসেসিং থেকে শুরু করে ঋণ আদায় পর্যন্ত) ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঋণ প্রদান করবে।
অর্থায়নকারী ব্যাংকসমূহ ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতা যাচাই সাপেক্ষে একক গ্রাহককে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা প্রদান করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সময়ে সময়ে গ্রাহক পর্যায়ে প্রদত্ত ঋণের পরিমাণ হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে পারবে।
গ্রাহক পর্যায়ে সুদ হার ও অন্যান্য চার্জ
গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। গ্রাহকের ঋণের ক্রমহ্রাসমান স্থিতির ওপর সুদ আরোপ করা হবে। ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের শর্ত বা নির্দেশনা মোতাবেক চার্জ বা ফি আদায় করবে ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক।
ব্যাংক পর্যায়ে সুদ হার
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকসমূহ কর্তৃক গৃহীত পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার ওপর ১ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করা হবে।
ঋণের মেয়াদ
ব্যাংক এবং গ্রাহক উভয় পর্যায়ে ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৬ মাস।
তহবিলের উৎস ও পরিমাণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে এই ঋণ প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। স্কিমের পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা। এ স্কিম থেকে প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে বিতরণ করা ঋণের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৫০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে চাহিদা বিবেচনায় এ পুনঃঅর্থায়নের পরিমাণ বাড়ানো হবে।
তহবিলের মেয়াদ
এ স্কিমের আওতায় তহবিলের মেয়াদ হবে তিন বছর। এ সময়ের মধ্যে তহবিলটি আবর্তনযোগ্য (রিভলভিং) হবে।
তহবিল ব্যবস্থাপনা
এ স্কিমের সামগ্রিক তদারকি, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে সম্পাদিত হবে। পুনঃঅর্থায়নের আবেদন পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিলসহ তহবিল ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।