বঙ্গবাজার ট্রাজেডির প্রায় এক বছর, ফেরেনি আগের জৌলুস
গত বছরের ৪ এপ্রিল। বেলা সাড়ে ১২টা। দাউদাউ করে পুড়তে শুরু করে বঙ্গবাজার। সেই সঙ্গে যেন পুড়ে শেষ হয়ে যায় ব্যবসায়ীদের ভাগ্য। কিছু সময় আগেও যিনি ছিলেন কোটিপতি, আগুন তাকে বসিয়ে দেয় পথে। সেই আহাজারি দাগ কেটে আছে মানুষের মনে। বঙ্গবাজার ট্রাজেডি প্রায় বছর ছুঁইছুঁই। এরই আগে শুরু হয়েছে ঈদের কেনাকাটা। কিন্তু বেচাবিক্রির চিরচেনা রূপে ফিরতে পারেনি এই মার্কেট। এক বছর আগেও যেখানে গড় বিক্রি ছিল লাখ লাখ টাকা, সেখানে বিক্রি হচ্ছে দুই-পাঁচ হাজার। অন্যদিকে, ক্রেতাদের দাবি—চাহিদা অনুযায়ী আগের মতো সব পাচ্ছেন না সেখানে।
গত বছরের অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সে অস্থায়ী তাঁবুতে চলছে বেচাবিক্রি। সেখানে ব্যবসায়ী ফরহাদ বলেন, সকালে দোকান খুলেছি, এখন দুপুর একটা বাজে। এখনও কিছুই বিক্রি করতে পারিনি। অন্যান্য বার ঈদের এমন সময়ে বেচাবিক্রিতে ব্যস্ত থাকতাম। এখন পোড়া কপাল, তীর্থের কাকের মতো বসে থাকি—ক্রেতা খুঁজি, কখন আসবে। ক্রেতা পেলে কেনা দামে হলেও পোশাক বিক্রি করি, কিন্তু অনেক ক্রেতা কেনা দামের চেয়েও অনেক কম দাম বলেন। তারপর চলে যান। তিনি আরও বলেন, আগে ঈদের সময় প্রতিদিন লাখ টাকার ওপরে কাপড় বিক্রি হতো। এখন তিন হাজার বিক্রি করা মুশকিল হয়ে পড়েছে।
বঙ্গবাজারে কেনাকাটা করছিলেন আবু বকর বিপ্লব। জিন্সের প্যান্ট খুঁজছিলেন তিনি। তিনি জানান, আগে সব কোয়ালিটির প্যান্ট পাওয়া যেত। এবার তেমন পাচ্ছি না।
ইডেন কলেজে পড়ালেখা করেন সেঁজুতি, থাকেন আজিমপুরে। তিনি বলেন, এই পথ দিয়ে প্রতিদিনই আমি টিউশনিতে যাই। মাঝেমধ্যে পছন্দের কিছু পেতে এখানে ঢুকি। মোটামুটি কম খরচে পোশাক পাওয়া যায়। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে নতুন ডিজাইনের মনের মতো পোশাক পাচ্ছি না। তাই কেনা হয়নি। সুমাইয়া নামে আরেক ক্রেতা বলেন, জামা দেখছি। কিন্তু পছন্দে মেলাতে পারছি না। পছন্দ মতো জামা পাওয়া যাচ্ছে না।
বিপ্লব, সেঁজুতি, সুমাইয়ার মতে, এই মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পর প্রায় এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। কিন্তু, স্থায়ী দোকান না হওয়ায় জৌলুস ফিরে পায়নি বঙ্গবাজার।