তফসিলের আগে ইসির তিন বিজ্ঞপ্তি
নভেম্বরের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা। এরপর থেকে সবার চোখ তফসিল ঘোষণায়। চারদিক এখন তফসিল নিয়ে আলোচনায় মুখর। জল্পনা-কল্পনা চললেও কবে ঘোষণা হবে এই তফসিল, তা নিয়ে কাটছে না ধোঁয়াশা। অধীর আগ্রহে তাই অপেক্ষায় সবাই। এমন এক সময় তিনটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইসি। বিজ্ঞপ্তিগুলোতে ভোটার, আচরণবিধি ও ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে যোগ্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে বলা হয়েছে।
আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) ইসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হক গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান।
ইসি জানায়, নির্বাচন কমিশন ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি ১৬ ও ১৭ বছর বয়সীদেরও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে থাকে। তবে, ১৬ ও ১৭ বছর বয়সীরা জাতীয় পরিচয়পত্র পেলেও তারা এই সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার নন।
২০০৫ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে জন্মগ্রহণকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে (আঠারো বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী) যারা জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন, তারাই কেবল ভোট দিতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট ভোটার এলাকার অথবা নির্বাচনি এলাকার অধিবাসী এবং যাদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অন্যদিকে, ভোটার তালিকায় নাম থাকার পরও আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত ব্যক্তি, বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত ব্যক্তি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত ব্যক্তিরা সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না।
অপর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অর্থ, অস্ত্র, পেশীশক্তি, স্থানীয় প্রভাব বা সরকারি ক্ষমতার দ্বারা নির্বাচন প্রভাবিত করা যাবে না। নির্বাচনি জনসভা বা মিছিলের দিন, সময় ও স্থান সম্পর্কে পূর্বেই স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে কোন সড়কে পুলিশ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া জনসভা করা যাবে না। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিলের ওপর অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ইত্যাদি লাগানো যাবে না। সরকারি ডাকবাংলো, রেস্ট হাউস, সার্কিট হাউস বা কোনো সরকারি কার্যালয়কে কোনো প্রকার প্রচারের স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
ভোটে অংশ নিতে আগ্রহী যেকোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত পোস্টার সাদা-কালো রঙের হতে হবে এবং এর আয়তন অনধিক ৬০ সেন্টিমিটার অনুপাত ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) সেন্টিমিটার এবং ব্যানার সাদা-কালো রঙের ও আয়তন অনধিক তিন মিটার অনুপাত এক মিটার হতে হবে। নির্বাচনি এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
এ ছাড়া কোনো প্রার্থীর পক্ষে ট্রাক, বাস, মোটর সাইকেল কিংবা অন্য কোন যানবাহন সহকারে মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বের করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণাকালে কোনো ধরনের তিক্ত, উসকানিমূলক এবং ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে, এমন কোনো বক্তব্য দেওয়া করা যাবে না। কোনো নাগরিকের জমি, ভবন বা অন্য কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির কোন ধরনের ক্ষতিসাধন করা যাবে না।
ইসির তৃতীয় বিজ্ঞপ্তিতে ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে যোগ্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে—সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রের ভোটার; ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, তার নির্বাচনি এজেন্ট ও পোলিং এজেন্ট; নির্বাচন কমিশনের বৈধ পরিচয়পত্রধারী পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক; অসমর্থ ও অন্ধ ভোটারের সহায়তাকারী এবং নির্বাচন কমিশন অথবা রিটার্নিং অফিসারের অনুমতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ব্যক্তিরাই কেবল ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।