চাঁদ হওয়ার স্বপ্ন দেখেন মুন
‘দেখছ, আমার মামা কী কামটাই না ঘটাইছে! আমার মামা এই বয়সে আইসা তার ভালোবাসার কইন্যারে বিয়া কইরা নিয়া আসছে। আর তুমি তো কিছুই করতেছ না।
তোমারে আমি এত ভালোবাসি, হায়রে নসিব! প্রেম বোঝে না রসিক কালা চান।’
শবনম পারভীন পরিচালিত ‘প্রেম বোঝে না রসিক কালা চান’ নাটকের সংলাপ এটি। সংলাপটি বলছিলেন এ প্রজন্মের অভিনেত্রী জান্নাতুন নূর মুন।
ভিট চ্যানেল আই টপ মডেল ২০১৪-এর দ্বিতীয় রানার আপ মুন। বিজয়ী হওয়ার পর দুটি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। প্রথম নাটকটি প্রচারের পর বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, ফেসবুক বন্ধুরা অনেক প্রশংসা করেছেন মুনের। নাটকটির নাম ছিল ‘অগোচরে ভালোবাসা’।
মুন বলেন,‘প্রথম নাটকে অভিনয় করার সময় অনেক নার্ভাস ছিলাম। নিশো ভাইয়ার সঙ্গে কাজ করেছি। তবে দ্বিতীয় নাটকটিতে কাজ করতে এসে একটু আরামবোধ করেছি। শবনম আপা শুটিংয়ের কয়েকদিন আগে আমাকে চিত্রনাট্য হাতে দিয়েছিলেন। ঢাকাইয়া ভাষার চিত্রনাট্য ছিল। আমি শবনম আপার বাসায় গিয়ে কয়েকদিন রিহার্সেল করেছি।’
ঢাকাইয়া সংলাপ বলা খুব কি কঠিন ছিল? এমন প্রশ্ন শুনে নোয়াখালীর মেয়ে মুন বলেন, ‘একটু তো কষ্ট হয়েছিলই। আমি অনেক চেষ্টা করেছি। সহশিল্পী সজল ভাইয়া অনেক সাহায্য করেছেন। তবে ঢাকাইয়া ভাষা আমি খুব ভালো বুঝি। আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব ঢাকাইয়া। এ ছাড়া প্রভা আপুর ঢাকাইয়া ভাষার অভিনয় করা নাটকগুলো আমি অনেক দেখেছি।’
‘প্রেম বোঝে না রসিক কালা চান’ নাটকটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল জিজ্ঞেস করতেই মুন বলেন, ‘নাটকটির শুটিং বাইরে হয়েছিল। অনেক দর্শক ভিড় করেছিল। নাটকে সজল ভাইয়া চটপটি বিক্রেতা ছিলেন। আমি তার প্রেমে পড়ি, সেও আমার প্রেমে পড়ে। কিন্তু আমার মামার ভয়ে সে আমার সঙ্গে প্রেম করতে চায় না। গল্পটা অনেক সুন্দর। সজল ভাইয়াকে কালো মেকাপ করে দেওয়া হয়েছিল। তাকে বাইরে এজন্য অনেকেই চিনতে পারেনি। মজার ব্যাপার হলো আমি চটপটি অনেক পছন্দ করি। কিন্তু শুটিংয়ের সময় এত চাপে ছিলাম যে কাউকে বলতেই পারিনি- ‘আমার চটপটি খেতে ইচ্ছা করছে!’
টপ মডেল প্রতিযোগিতা থেকে দুই লাখ টাকা পেয়েছিলেন মুন। সেই টাকা দিয়ে কী করেছেন জানতে চাইলে মুন বলেন, ‘টাকা ব্যাংকে রেখে দিয়েছি। বন্ধুদের ট্রিট দিয়েছি। আমার নিজের জন্য অনেক শপিং করেছি। এতগুলো টাকা কখনো পাব এটা স্বপ্নেও ভাবিনি।’
ছোটবেলায় নাচ-গান-অভিনয় কিছুই শেখেননি পাঁচ ফিট সাত ইঞ্চির সুদর্শনা মুন।
হাসলেই মুনের টোল পড়ে। সবসময় হাসিখুশি থাকতেই পছন্দ করেন তিনি। সময় পেলে আকাশে চাঁদ দেখেন। চাঁদ হওয়ার স্বপ্ন ছোটবেলা থেকেই ছিল মুনের। তাহলে স্বপ্ন কি সত্যি হচ্ছে? এ প্রসঙ্গে মুন বলেন, ‘সফল অভিনেত্রী হতে চাই। সুবর্ণা মুস্তাফা এবং নুসরাত ইমরোজ তিশার অভিনয় দেখে সবসময় অনুপ্রাণিত হই।’
টপ মডেল প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার পরও আপনাকে রাস্তায় দেখে কেউ কি চিনতে পারছে? এমন প্রশ্ন শুনে একটু ভাবনায় পড়ে যান মুন। কিছুক্ষণ ভেবে বলেন, ‘না, ওভাবে কেউ চিনছে না। এটার কারণ হয় তো আমাদের প্রচার ঠিক সেভাবে হচ্ছে না। আমরা কিন্তু নিয়মিত কাজ করছি। আমাদের বিলবোর্ডও হয়েছে। আসছে ঈদ উপলক্ষে বেশকিছু পণ্যের মডেল হওয়ার কথাবার্তা চলছে। দেখা যাক কী হয়!’
মুনের পথচালা সবে শুরু। ঠিক পথ ধরেই এগিয়ে যেতে চান তিনি। হয়তো তারকাখচিত আকাশে একটি চাঁদ হবেন তিনি। এখন শুধুই অপেক্ষা।