সালমানের মামলা
চূড়ান্ত রায় কাল
১২ বছরের মামলার অবসান হচ্ছে আগামীকাল। কী ঘটতে যাচ্ছে সালমান খানের ভাগ্যে? ৬ মে কি তাঁর জীবনে এক দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে, নাকি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ এনে দেবে? এনডিটিভির খবর বলছে, মুম্বাইয়ের আদালতে চলমান সালমানের মামলাটির চূড়ান্ত রায় আগামীকাল বিচারপতি ডি. ডব্লিউ দেশপাণ্ডে ঘোষণা করতে যাচ্ছেন।
মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে মানুষ চাপা দিয়ে হত্যা করার অভিযোগ সালমানের বিরুদ্ধে। সালমানের দাবি, এ সময় তিনি নন-গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর ড্রাইভার।
প্রসিকিউশনের দাবি-২০০২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জুহুর রেইন বার অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে মদ গিলেছিলেন সালমান, আর সে অবস্থাতেই গাড়ি চালিয়ে রওনা দেন ম্যারিয়ট হোটেলের আশপাশ থেকে। বান্দ্রায় নিজের বাড়ি ফিরবার পথে স্টিয়ারিংয়ের নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি, পুরো গাড়ি তুলে দেন আমেরিকান এক্সপ্রেস বেকারির পাশের ফুটপাতে ঘুমন্ত বস্তিবাসীর ওপর।
সরকার পক্ষে আইনজীবী প্রদীপ ঘরত জানিয়েছেন, সালমানের বিরুদ্ধে প্রমাণ খুবই শক্ত। প্রথম দফায় সালমানের বিরুদ্ধে ১৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন, দ্বিতীয় দফায় ২৭ জন।
বাদীপক্ষের আরো দাবি, আইনমতো এই ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকদের এ ঘটনা জানাননি সালমান; বরং পালিয়েছেন দূর্ঘটনাস্থল ছেড়ে। অন্যদিকে সালমানের দাবি, এ সময় তিনি মদ্যপ ছিলেন না, গাড়িও চালাচ্ছিলেন না, এমনকি দুর্ঘটনাস্থলে তিনি অবস্থান করেছিলেন ১৫ মিনিট পর্যন্ত। চালকের আসনে ছিলেন ড্রাইভার অশোক সিং। এ কথা স্বীকার করে আদালতে বয়ান দিয়েছেন অশোক সিং স্বয়ং। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে টায়ার ফেটে যাওয়া এবং ব্রেক জ্যাম হয়ে যাওয়ার কথা বলেন অশোক। সাথে যোগ করেন যে, এ ঘটনা তিনি পুলিশ স্টেশনে জানালেও তাঁকে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় I এরপর তিনি বিষয়টি সম্বন্ধে সালমানকে জানান।
তবে রায় যাই হোক না কেন, এর প্রভাব যে চূড়ান্ত রকমের হতে যাচ্ছে- তা নিয়ে কী আর বলার আছে! করণ জোহর আবেগী ভাষাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন, ‘আমরা জানি না কী বলবো, কারণ এটা বিচারাধীন বিষয়। তবে আমাদের সবসময়েই সালমানের জন্য প্রার্থনা থাকবে।’
সালমান খান এ মুহূর্তে ভারতের সফলতম অভিনেতা, কাজ করছেন সাতটি ছবিতে, যার দুটির কাজ চলছে এখন। সুরজ বরজাতিয়ার ‘প্রেম রতন ধান পায়ো’ এবং কবির খানের ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ছবির শিডিউল শেষের দিকে, তাই খানিকটা নিশ্চিন্ত হতে পারেন সালমান।
ট্রেড অ্যানালিস্ট কোমল নাহতা বলেছেন, ‘যদি এখনকার দুটি ছবির জন্য ৭৫ কোটি করে ধরা হয়, তাহলে দুটো ছবি মিলিয়ে হয় ১৫০ কোটি রুপি। তিনি যে ছবিগুলোতে স্বাক্ষর করেছেন, তার জন্য এখন যদি কেবল ৫০ কোটিও যোগ করা হয়, তাও অঙ্কটা দাঁড়ায় ২০০ কোটি রুপিতে। টাকার এই পরিমাণ দুশ্চিন্তা বাড়ানোর মতো, তবে এই কেসে আবারও আপিলের সুযোগ রয়েছে সালমানের, বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।’ এ ছাড়া সালমান খান যেসব পণ্যের প্রচারণা করেন, তাদের সালমানের ওপর বিনিয়োগ রয়েছে ন্যূনতম ২৩০ কোটি রুপি।
২০১৪ সালে সালমানের ছবি থেকে বলিউডের আয় হয়েছে ৩৩৮ কোটি রুপি। সুতরাং, এই রায়ের সাথে কেবল সালমানের নয়- জড়িয়ে রয়েছে বলিউড বক্স অফিসের সামনের দিনের ভাগ্য।