ডায়াবেটিস রোগীরা কি দুধ পান করতে পারবেন?
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খাদ্যতালিকা খুব সতর্কতার সাথে অবলম্বন করতে হয়। কারণ এটি তাদের রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করে। প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় দুধ সাধারণত ডায়েটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়। তবে অনেকের মতে, দুধে অস্বাস্থ্যকর চর্বি থাকতে পারে। যা ডায়াবেটিসের সাথে সম্পর্কিত কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণা পরামর্শ দেয় যে, দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে। এ ছাড়া, তারা বিপাক এবং স্থূলত্বের বিরুদ্ধে সুরক্ষা সরবরাহ করে। অর্থাৎ প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে পারে।
দুধ কি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারে?
ডাঃ ভি মোহন, ডায়াবেটিস স্পেশালিটিস সেন্টারের চেয়ারম্যান এবং চিফ ডায়াবেটোলজিস্ট এইচটি ডিজিটালকে বলেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুধ এবং ডায়াবেটিস একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে ওঠেছে। কিছু মানুষের মতে, গরুর দুধ পান করা মানুষের জন্য উপযুক্ত নয়। অন্য একদল মানুষ যুক্তি দেয় যে, দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণ টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মূল কারণ। আমাদের গবেষণার ফলাফল একেবারে বিপরীত। চেন্নাই আরবান-রুরাল এপিডেমিওলজি স্টাডি’র (সিউআরএস) প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, দুধ ভোক্তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস এবং স্থূলত্বের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করেছে”।
তিনি আরও জানান, "আমরা ১০ থেকে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিস ছিল না এমন লোকদের পর্যবেক্ষণ করেছি। পরবর্তীতে কতজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছে তা নির্ধারণ করেছি। এর সাথে, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার সাথে এই রোগের বিকাশকে সম্পর্কিত করেছি। এই গবেষণায়, আমরা দেখাতে সক্ষম হয়েছি যে যারা দুধ, অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য, বিশেষশ করে দই, পনির এবং মাখনের মতো পণ্য গ্রহণ করেছেন তারা ডায়াবেটিসের হার অনেক কম অনুভব করেছেন। এখান থেকেই দুধের প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব পাওয়া গেছে”। স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যগুলো বিপাক সিনড্রোম স্থূলত্ব এবং উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধেও সহায়তা করে।
ডাঃ ভি মোহন বলেন "দুধ এবং দই সহ দুগ্ধজাত পণ্যগুলোর প্রভাবের একটি মেটা-বিশ্লেষণ এবং পদ্ধতিগত মূল্যায়ন করা হয়েছিল। সম্প্রতি আমরা আবিষ্কার করেছি যে, দুধ এবং দই উভয়ই বিপাক সিনড্রোম এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করে”। তার মতে, দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া বিপাকীয় সমস্যার ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। দুধ ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন উভয়ের একটি চমৎকার উত্স। বিশেষ করে শিশু এবং মহিলাদের জন্য দুধ খুবই উপকারি।
সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস