যে ৮ কারণে ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ত্বকে বলিরেখা দেখা দেয়। আমাদের ত্বক পাতলা ও শুষ্ক হয়ে যায়। কিন্তু অনেকেই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এটি একটি উদ্বেগের কারণ। এ জন্য অবশ্যই এর কারণ জানা উচিত। সময় থাকতে প্রতিকার করলে, অকালে বার্ধক্য প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডাঃ সন্দীপ বব্বর, ফরিদাবাদের রেভাইভ স্কিন হেয়ার অ্যান্ড নেইল ক্লিনিকের মেডিকেল ডিরেক্টর এবং চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, হিন্দুস্তান টাইমসের লাইফস্টাইলে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, ৮টি কারণ বয়সের আগেই বলিরেখা দেখা দেয়।
সূর্যের আলো
ত্বকে বলিরেখা দেখা দেওয়ার প্রধান কারণ সূর্য। সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি ত্বকের কোলাজেন ভেঙ্গে ফেলে। এ জন্য ত্বকের গভীরে এই রশ্মি প্রবেশ করতে পারে। তাই সানস্ক্রিন লাগান। যারা ফিল্ড ওয়ার্ক করেন তাদের বলিরেখা আগে পড়ে। তাই ত্বক ঢেকে রাখে এমন পোশাক পড়ুন। ক্যাপ বা ছাতা বহন করুন। সানস্ক্রিন লাগাতে অবশ্যই ভুলবেন না। তাহলে অকালে বার্ধক্য হওয়া থেকে বেঁচে যাবেন।
ধূমপান এবং মদ্যপান
ধূমপান ত্বকে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটায়। ত্বকে বার্ধক্যভাব দ্রুত আনে। অন্যদিকে, অ্যালকোহল ত্বককে শুষ্ক করে দেয়। ত্বক দুর্বল হয়ে যায়। কম বয়স থাকতেই ত্বক ঝরে পড়তে শুরু করে। বলিরেখা দেখা দেয়। তাই ত্বকের সুস্থ্যতার জন্য ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন।
ভ্রু কুঁচকানো
বলিরেখা পড়ার অন্যতম কারণ হল ভ্রু কুঁচকানো। এ সময় মুখের পেশী টানটান হয়ে যায়। ফলে ত্বকের কোষগুলি সংকুচিত হয়। ত্বক নমনীয়তা হারায়। তাই চেষ্টা করুন এই খারাপ আচরণটি ত্যাগ করতে।
স্ট্রেস
বয়স বাড়লে আমাদের শরীর কোলাজেন তৈরি করা কমিয়ে দেয়। স্ট্রেসে থাকলে তা আরও কমিয়ে দেয়। কোলাজেন কমে গেলে ত্বকের নমনীয়তা কমে যায়। এর ফলে ত্বকের ক্ষত নিরাময় ক্ষমতা কমে যায়। স্ট্রেসে থাকলে আমরা বার বার ভ্রু কুঁচকে থাকি। এতে বলিরেখা আরও জলদি পড়ে। স্ট্রেসে থাকা অবস্থায় হরমোনে কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যায়। এটি ত্বকের কোলাজেন এবং ইলাস্টিনকে ক্ষয় করতে পারে।
শুষ্ক ত্বক
শুষ্ক ত্বকে বলিরেখা তাড়াতাড়ি দেখা দেয়। এ ধরনের ত্বকে সিবাম কম উৎপাদন হয়। সিবাম হচ্ছে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। তাই বলিরেখা এড়াতে দিনে অন্তত দুইবার ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের শুষ্কতা কমে যাবে।
ঘুম কম হওয়া
ঘুম ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে। এগুলো সবই ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। ঘুম কম হলে ত্বকের ক্ষতি হয়। ত্বকে বলিরেখা পড়ে দ্রুত।
প্রসাধনীর অত্যধিক ব্যবহার
অতিরিক্ত প্রসাধনী আপনার ত্বকের ক্ষতি করবে। ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। ছিদ্র আটকে দেয়। কোলাজেন এবং সিবাম কম উৎপাদন হয়। যার ফলে বলিরেখা শীঘ্রই দেখা দেয়।
পুষ্টির ঘাটতি
পুষ্টির ঘাটতি হলে ব্রণ, ফুসকুড়ি, শুষ্ক ত্বক, বলিরেখা দেখা দেয়। ভিটামিনের অভাবে ত্বক নিস্তেজ হয়ে যায়। ত্বকে পিগমেন্টেশন দেখা দেয়। খাদ্য আমাদের ত্বকে প্রভাব ফেলে। তাই খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি, ডি, বি, ই এবং কে অন্তর্ভুক্ত করুন। এ সব উপাদান ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে।
ডক্টর সন্দীপ বব্বর বলেছেন, ‘বয়সের ছাপ কমাতে আজকাল অনেকেই বিভিন্ন ধরণের থেরাপি নিয়ে থাকে। এর থেকে ময়েশ্চারাইজিং, সানস্ক্রিন ব্যবহার, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, স্ট্রেস মুক্ত জীবনযাপন, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান এবং অ্যালকোহল মুক্ত জীবনধারা অকালে বার্ধক্য থেকে রক্ষা করবে। এর পাশাপাশি, বেশি বলিরেখার জন্য মাইক্রোডার্মাব্রেশন, বোটক্স, ফিলার, ফেসলিফ্ট ইত্যাদির মতো থেরাপিগুলো করানো যেতে পারে’।
সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস