ব্লগার রাজীব হত্যার রায় ৩১ ডিসেম্বর
ব্লগার রাজীব হায়দার শোভন হত্যা মামলার রায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর দেওয়া হবে। আজ সোমবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৩-এর বিচারক সাঈদ আহম্মেদ এ দিন ধার্য করেন। আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বিচারক রায়ের এই দিন নির্ধারণ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমানের সহকারী আইনজীবী ফয়সাল ভূইয়া অনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবার আলোচিত এ মামলার রায় হতে যাচ্ছে। আসামি সবাইকে আজ আদালতে হাজির করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের ফাঁসি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়।’
অপরদিকে আসামিপক্ষ আদালতে লিখিতভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন, ‘ব্লগার রাজীব কে তা তারা জানেন না। শুধু তাই নয়, ঘটনার আগে আসামিরা একে অপরকে চিনতেনও না।’
রাজীব হত্যা মামলার আসামি আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের প্রধান মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে বলেন, তাঁকে এ মামলায় আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের প্রধান হিসেবে দেখানো হয়েছে। আনসারুল্লাহ বাংলাটিম নামের কোনো দল আছে কি না, তা তিনি জানেন না।
এ ছাড়া মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী বলেন, ‘চরমোনাই পীরের দলে যোগ না দেওয়ায় তাদের সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব ছিল। তারা শত্রুতা করে আমাকে ধরিয়ে দেয়।’
মামলার আরেক আসামি এহসান রেজা রুম্মান বলেন, ‘নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির একটি মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে বলে আমাকে ডিবি পরিচয় দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। আমি ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়।’
অপর আসামি নাফিজ ইমতিয়াজ বলেন, ‘নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় দুই ব্যক্তি আমাকে সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তারা আমাকে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আর মামলার অপর আসামিদের আমি চিনি না।’
রাজীব হত্যা মামলায় ৫৫ সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাসায় ফেরার পথে রাজধানীর পল্লবীর কালশীর পলাশনগরে আততায়ীর হাতে নিহত হন রাজীব হায়দার শোভন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ডা. নাজিম উদ্দীন পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পরের বছর ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আটজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আসামিরা হলেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দিপু (২২), মাকসুদুল হাসান অনিক (২৬), এহসানুর রেজা রুম্মান (২৩), মো. নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদ (১৯), নাফিজ ইমতিয়াজ (২২), সাদমান ইয়াছির মাহমুদ (২০), মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী ও রেদোয়ানুল আজাদ রানা (৩০)।
এর মধ্যে রানা পলাতক রয়েছেন। বাকি সাত আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং কারাগারে আটক রয়েছেন।
২০১৫ সালের ১৮ মার্চ ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মামলায় বিচার শুরু করার নির্দেশ দেন।