যেভাবে কাজ করবে বিমানবন্দরের ই-গেট
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-পাসপোর্টধারীদের জন্য ই-গেট চালু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার পুরোপুরি এ সার্ভিসটি চালু করা হয়েছে। এর আগে গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের ১১ মাস ৮ দিন পর পরীক্ষামূলকভাবে এই গেট ব্যবহার করা হয়।
যে ভাবে কাজ করবে ই-গেট
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর জানিয়েছে, ই-পাসপোর্ট নিয়ে যখন একজন ব্যক্তি ই-গেটের কাছে যাবেন, তখন একটি নির্দিষ্ট স্থানে ই-পাসপোর্টটি রাখলে সঙ্গে সঙ্গে গেট খুলে যাবে। তখন নির্দিষ্ট নিয়মে গেটের নিচে দাঁড়ানোর পর ক্যামেরা ওই ব্যক্তির ছবি তুলে নেবে। এরপর সব ঠিকঠাক থাকলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ইমিগ্রেশন পার হয়ে যেতে পারবেন যাত্রী। তবে যদি কোনো যাত্রী ভুল করেন, তাহলে লাল বাতি জ্বলে উঠবে। তখন সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সঠিকভাবে ই-পাসপোর্ট ব্যবহারে ওই যাত্রীকে সহযোগিতা করবেন।
১৮ সেকেন্ডে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন
ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে ১৮ সেকেন্ডে একজন যাত্রী নিজেই নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোট ১৫টি ই-গেট বসানো হয়েছে। তারমধ্যে বিমানবন্দরের ডিপার্চার (বহির্গমন) এলাকায় ১২টি এবং অ্যারাইভাল (আগমনী) এলাকায় তিনটি ই-গেট বসানো হয়েছে। রোববার ও সোমবার পরীক্ষামূলকভাবে এ গেট ব্যবহার করা হয়েছিল। এতে দেখা গেছে, মাত্র ১৮ সেকেন্ডেই একজন যাত্রী নিজেই নিজের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারছেন।
এ ছাড়া শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছয়টি এবং ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছয়টি ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন। আর ২০২১ সালের ৩০ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেট উদ্বোধন করেন। এরপরে ১১ মাসেও ই-গেট চালু হয়নি। অবশেষে আজ থেকে ই-গেট চালু হলো।
২০১৬ সালে ২৪ এপ্রিল পাসপোর্টসেবা সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর বিষয়ে কথা হয়। এক বছর পর ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জি-টু-জি প্রক্রিয়ায় জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচর সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি একই বছর আগস্টে ছয়টি দেশের পাঁচটি কোম্পানি পরিদর্শন করে। পরির্দশন শেষে ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০১৮ সালের ২১ জুন ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রকল্প অনুমোদন পায়। সেই বছরই ১৯ জুলাই জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ এর সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি হয়। এই সংস্থাটির মাধ্যমেই ই-পাসপোর্ট ও ই-গেট স্থাপন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।