ঘর ভেঙে মেঘনায় বিলীন, রাইস মিলের দুই শ্রমিক নিখোঁজ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভৈরববাজার নদীবন্দর এলাকায় হঠাৎ করে একটি রাইস মিলের শ্রমিকদের থাকার ঘর মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ সময় শরিফ ও মোস্তাক নামে দুই শ্রমিক নিখোঁজ হন। আজ রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল নিখোঁজ শ্রমিকদের উদ্ধারে কাজ করছে। বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উদ্ধার কাজের খোঁজ-খবর নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন জানায়, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও নেত্রকোনায় ভয়াবহ বন্যার কারণে কয়েকদিন ধরে মেঘনা বেশ উত্তাল। বাড়ছে পানি। প্লাবিত হচ্ছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল। আজ সকাল ৮টার দিকে ভৈরববাজার নদীবন্দর সংলগ্ন নদী তীরবর্তী এই রাইস মিলটির দক্ষিণ-পূর্বকোণে ভাঙন দেখা দিলে শ্রমিকরা তাঁদের ঘরের মালামাল সরানোর কাজ করছিলেন। সেসময় হঠাৎ একটি ঘর ভেঙে নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। এ সময় শরীফ ও মোস্তাক নিখোঁজ হন।
রাইস মিলটির শ্রমিক সর্দার নূরুল আমিন সর্দার ও নিখোঁজ মোস্তাকের ভাই মোজাম্মেল অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন আগে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ রাইস মিল সংলগ্ন এলাকায় পলি অপসারণের কাজ করে। ওই সময় তারা রাইছ মিলটি লাগোয়া স্থানে খনন কাজ না করার অনুরোধ করলেও শোনেনি কর্তৃপক্ষ। তাঁর দাবি, এই খননের কারণেই আজকের ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
ভৈরববাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন জানান, সকাল পৌনে ৯টার দিকে তারা এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। বর্তমানে তারা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন ইউএনও মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ। এ সময় তিনি ভাঙন এলাকা পরিদর্শনসহ উদ্ধারকাজের খোঁজ-খবর নেন। পরে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, উজানের পানি ভৈরবের মেঘনা দিয়ে যেহেতু নামে, তাই কয়েকদিন ধরেই মেঘনা উত্তাল। সকালে ভাঙন দেখা দেওয়ার পর মিল কর্তৃপক্ষের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার ছিল। নিখোঁজ শ্রমিকদের উদ্ধার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসন পাশে আছে।
বিআইডব্লিউটিএর খনন সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ইউএনও জানান, খনন নয়, নদী তীরবর্তী ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হয়েছিল। তাঁরা কাজ শুরুর আগে আমাকে এই বিষয়ে একটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন।
এদিকে, নিখোঁজ শ্রমিক শরিফ ও মোস্তাকের পরিবারে শোকের মাতম চলছে।