দ্বিতীয় দিনের মতো বানভাসি মানুষের বাড়িতে এনটিভির ত্রাণ
চারপাশে থইথই পানি। হাওর অঞ্চলের যে কয়েকটি বাড়িঘর দেখা যাচ্ছে, তার সবগুলোই পানির নিচে। এ ছাড়া স্রোত আর ঢেউয়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে অনেক বসতবাড়ি। এমনই এক ভয়াবহ পরিস্থিতি পার করছে সুনামগঞ্জের মানুষ।
এ অবস্থায় হঠাৎ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে মতিন মিয়ার বাড়ির সামনে ভেড়ে এনটিভির নৌকা। এ সময় ১৫ কেজি ওজনের খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট হাতে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মতিন মিয়া।
সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মতিন মিয়া (৫৫) বলেন, ‘এ দুঃসময়ে কেউ কোমরসমান পানিতে বন্দি মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী এনে দেবে, তা কল্পনার বাইরে ছিল। যেখানে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা খবর নেননি, সেখানে এনটিভির পক্ষ থেকে বাড়ির ভেতরে খাবার দেওয়া হচ্ছে। আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে এনটিভি কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই।’
সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত মানুষের জন্য দ্বিতীয় দিনের মতো ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি।
এর আগে গতকাল বুধবার এনটিভির পক্ষ থেকে সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ১০ গ্রামের ৩০০ পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। একইভাবে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ও লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারের মধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়।
সহায়তার অংশ হিসেবে আট কেজি চাল, এক কেজি চিনি, এক কেজি তেল, এক কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি আলু, এক কেজি ডাল, বিস্কুট ও মোমবাতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, নিজেদের বাড়িতে ত্রাণ সহায়তা পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকেই বলেন, ‘এমন কাজ কেউ করেনি। হাত বাড়িয়ে ডাকার পরও কেউ কিছু দেয়নি। কিন্তু, আপনারা নিজে আমাদের কাছে এসে খাবার দিয়ে গেছেন।’
মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের গোলাপ মিয়া (৬০) বলেন, ‘আপনারা যা করেছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমার ইটের দেয়াল পড়ে গেছে, টিন ভেসে গেছে। এ সহায়তার কারণে আমাদের যে কী উপকার হলো, তা আল্লাহ ছাড়া ভালো কেউ জানে না।’
এ সময় এনটিভির ত্রাণ সহায়তার কাজে থাকা স্বেচ্ছাসেবকেরা জানান, এটি খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। প্রায় ১৫ কেজির ত্রাণের প্যাকেট দিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন চলে যাবে। এনটিভির এই কাজ অন্যেরা অনুকরণ করতে পারে।