মশক নিধন অভিযানের নবম দিন, প্রায় নয় লাখ টাকা জরিমানা
দিনদিন বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর যেন তিল ঠাঁই নেই। পরিস্থিতি সামলাতে মশার আবাসস্থল ধ্বংসে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। চলছে তাদের মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন অভিযান। আজ সোমবার (১৭ জুলাই) ছিল এর নবম দিন। এদিন এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১৩টি মামলায় মোট আট লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৬-এর আওতাধীন উত্তরা ১১নং সেক্টর এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী আজ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে একটি বেসরকারি হাসপাতালের বেজমেন্টেও পাওয়া গেছে এডিসের লার্ভা। এজন্য প্রতিষ্ঠানটিকে একটি মামলায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত।
অঞ্চল-৫-এর আওতাধীন রায়ের বাজার আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বির আহমেদ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে চারটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় চার মামলায় মোট চার লাখ টাকা জরিমানা আদায় হয় এবং এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করা হয় ও সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ফার্মগেটে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান সমাজ কল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন-উল-হাসান।
অঞ্চল ১ ও ৭-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন উত্তরা ৭নং সেক্টর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
এ ছাড়া অঞ্চল-৪-এর আওতাধীন ৬০ ফিট ও পশ্চিম মনিপুর এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবেদ আলী এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে প্রায় ৯০টি ভবন, স্থাপনা, জলাশয়, রেস্টুরেন্ট ও দোকানপাট পরিদর্শন করা হয়েছে। ছয়টি নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা পাওয়ায় ছয়টি মামলায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। লার্ভা ধংস করা হয়েছে।
অভিযান পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ইসমাইল মোল্লা, উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার ও সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা আলী।
অঞ্চল-৯-এর আওতাধীন পশ্চিম নূরের চালা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ভবন, স্থাপনা, জলাশয়, রেস্টুরেন্ট ও দোকানপাটসহ মোট ৩১০টি স্পট পরিদর্শন করা হয়। একটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়া ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে লিফলেট বিতরণ করে এবং মাইকিং করে জনসাধারণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতন করেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্যরাও ডিএনসিসির কর্মীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন অভিযান তদারকির জন্য সকল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে দশটি টিম গঠন করা হয়েছে। দশটি টিম প্রতিদিন চলমান অভিযান তদারকি করছে।