সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের বৈঠক, আসতে পারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি বৈঠকে বসছে আজ শনিবার (১২ আগস্ট)। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত রোববার (৬ আগস্ট) গণভবনে আওয়ামী লীগের তৃণমূলনেতা ও জনপ্রতিনিধি নিয়ে বিশেষ বর্ধিত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তৃণমূলের নেতারা নানান অভিযোগ, অনুযোগ করেন। এরপরই কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নেতাকর্মীদের ‘বিশেষ বার্তা’ দেবেন দলীয় সভাপতি। এছাড়া বৈঠকে নির্বাচনের প্রস্তুতি, তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিভেদ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা, বিএনপিসহ বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলাসহ নানান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠকের জন্য নয়টি এজেন্ডা ঠিক করা হয়েছে। এগুলো হলো—শোক প্রস্তাব, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন (২৮ সেপ্টেম্বর), শেখ রাসেল দিবস (১৮ অক্টোবর), জেলহত্যা দিবস (৩ নভেম্বর), নূর হোসেন দিবস (১০ নভেম্বর), ডা. মিলন দিবস (২৭ নভেম্বর), সমসাময়িক বিষয় (জাতীয় ও আন্তর্জাতিক), সাংগঠনিক বিষয় ও বিবিধ। এ ছাড়া বৈঠকে একগুচ্ছ নির্বাচনি দিকনির্দেশনা দিতে পারেন দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা।
নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে চলমান রাজনৈতিক ইস্যু, বিরোধী দলগুলোর লাগাতার আন্দোলন মোকাবিলায় করণীয় এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে বৈঠকে। এ বৈঠক থেকেই নির্ধারণ হবে নির্বাচনি কৌশল।
আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘আজকের বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে দলের আট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের দেওয়া রিপোর্টগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হবে। বিশেষ বর্ধিত সভায় যে সমস্যাগুলো তৃণমূলের নেতারা জানিয়েছেন, সেগুলোর বিষয়েও নিদের্শনা দিতে পারেন দলের প্রধান।’
এছাড়া বৈঠকে বিভিন্ন সময় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নৈতিক স্খলনের কারণে বহিষ্কৃত নেতাদের দলে ফিরিয়ে আনা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। নানান অভিযোগ থাকলেও দলের জন্য বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন অথবা বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে মার খেয়েছেন, জেল খেটেছেন তাদের শর্ত দিয়ে ক্ষমা করে পদ-পদবি ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি নির্বাচনি ইশতেহারের কতটুকু অগ্রগতি হলো সে বিষয়টিও আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক থেকে দলের তৃণমূল নেতাদের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে দিকনির্দেশনা দেবেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের পক্ষে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় এতদিন সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন এইচ টি ইমাম। তার মৃত্যুর পর এখন কার কাঁধে এ দায়িত্ব পড়বে, তা নিয়ে আওয়ামী লীগে নানা ধরনের আলোচনা রয়েছে। সেই বিষয়েও আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজকের বৈঠক আমাদের নিয়মিত একটি বৈঠক। এ বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনায় হয়। এ ছাড়া সামনে নির্বাচন। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের এই কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনি ইশতেহার তৈরির কাজ কতদূর, কোনো সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে কি না, এসব বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।’