মা-ছেলের ভালোবাসাময় দেখা
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তখন গুরুতর অসুস্থ। লড়ছিলেন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা। সকালে একটু ভালোর দিকে তো বিকেলে ভীষণ খারাপের দিকে। যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে, এমন মনোভাবে তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিম প্রস্তুত থাকত। প্রস্তুত থাকতেন দলীয় নেতাকর্মীরা। প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল গণমাধ্যমও।
এমন একটি সময়, অর্থাৎ গত বছরের ২৪ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে দেখতে তাঁর প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসেন। বিএনপির নেতাকর্মীরাসহ দেশবাসী তখন প্রিয় নেত্রীর দোয়া কামনায় প্রার্থনারত। অথচ তাঁর বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাকে এক নজর দেখতে পারেননি।
অনেকের মতো তারেক রহমানও হয়তো ভাবছিলেন, ‘যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটে যেতে পারে।’ এমন ভাবনার পরও মুমূর্ষু মাকে একবার ছুঁয়ে দেখতে পারেননি তিনি। কারণ, মা-ছেলে দুজনের মাথায় তখন আদালতের দণ্ড। খালেদা জিয়া কারাগারে বন্দি আর তারেক রহমান নির্বাসিত।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার এমন সংকটময় সময়ের কথা চিকিৎসকদের বরাতে গণমাধ্যম একাধিকবার জানিয়েছে। অথচ তারেক রহমান কিংবা খালেদা জিয়া, কেউ একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। মায়ের কাঁধে হাত রেখে বড় সন্তান তারেক রহমান একবার বলতে পারেননি, ‘মা, তুমি সুস্থ হয়ে যাবে।’ এ আক্ষেপ হয়তো দীর্ঘদিন পোড়াবে তাঁদের।
কথায় আছে, ‘রাখে আল্লাহ মারে কে?’ যে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আদালত মা-ছেলের মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই শেখ হাসিনাই আজ বাংলাদেশ থেকে পলাতক। আর খালেদা জিয়া এখনও বেঁচে আছেন এবং তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁর আজ দেখা হলো লন্ডনের বিমানবন্দরে।
মা-ছেলের জন্য এ এক অনন্য মুহূর্ত। দীর্ঘদিন পর মা-ছেলে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আবেগাপ্লুত। এ যেন মা-ছেলের এক ভালোবাসাময় দেখা!