সানি-তরুণী, কারো বাড়িতে কেউ নেই!
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকা। একটি জীর্ণ-শীর্ণ গলি,পলেস্তরা খসে পড়ছে। কয়েক ধাপ সামনে এগিয়েই বাড়িটি পাওয়া গেল। ওপরে টিনের চালা। একটি ছোট্ট গেট। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা গেল, দরজায় তালা ঝুলছে।
এই বাড়িতেই থাকেন সেই তরুণী, যার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানিকে।
আজ রোববার সন্ধ্যায় খোঁজখবর নিতে যাওয়া হয় মোহাম্মদপুরের কাটাসুরে মামলার বাদী ওই তরুণীর বাড়িতে। বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া গেল না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এই বাড়িটিতে আটটি কক্ষ রয়েছে। এর দুটিতে থাকেন তরুণীর পরিবার। একটি কক্ষের ভাড়া এক হাজার ৫০০ টাকা। আর একটি রুম তারা তাদের মামির মাধ্যমে পান, যার কোনো ভাড়া দিতে হয় না।
আজ দুপুর ১২টার দিকে নাসরিন ও তাঁর পরিবার ঘরে তালা লাগিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। কিন্তু কোথায় গেছে তা জানে না কেউ।
এক তরুণীকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি নিজেকে নাসরিনের মামাতো বোন বলে পরিচয় দিলেন। নাম রেহেনা (২২)।
রেহেনা দাবি করেন,জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আগে থেকেই ক্রিকেটার আরাফাত সানি ওই বাসায় যাতায়াত করতেন। তবে স্থানীয় আরো অনেকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, তারা কখনোই ওই বাড়িতে আরাফাত সানিকে যেতে দেখেনি।
আরাফাত সানির বিষয়ে জানতে চাইলে রেহেনা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ১০ বছর ধরে ওই তরুণী তাঁর পরিবারের সঙ্গে এই বাড়িতে বসবাস করছেন। তাঁর বাবা একটি ওষুধ কোম্পানির গাড়ি চালান। আরাফাত সানি জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আগে থেকেই তাদের দুজনের সম্পর্ক ছিল।
নিজেকে ওই তরুণীর মামি বলে পরিচয় দিয়ে মোছা. বানু বেগম (৪০) নামের এক নারী বলেন, ওই তরুণী কিছুদিন আগে মোহাম্মদপুর সেন্ট্রাল কলেজে ইংরেজি বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হয়েছেন। একদিন টিভিতে খেলা দেখার সময় সানিকে দেখিয়ে তাদের প্রেমের কথা জানিয়েছিলেন তাঁকে। তাঁরা গোপনে বিয়ে করেছেন বলেও তাঁকে জানান ওই তরুণী।
চার বোনের মধ্যে তরুণী তৃতীয়। সর্বশেষ কবে সানি এ বাসায় এসেছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁর মামি বানু বেগম বলেন, বছর দুয়েক আগে তিনি সানিকে ওই বাসায় আসতে দেখেছেন। তবে এ মামলার বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতেন না তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, তাঁদের চার বোনের মধ্যে দুজনের বিয়ে হয়েছে। তারা এলাকায় ঔদ্ধ্যত আচরণ করতেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
তখন সানি কবুতরকে খাওয়াচ্ছিলেন
আজ সন্ধ্যায় সাভারের আমিন বাজারে জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানির বাড়িতে গেলে তাঁর পরিবারের কাউকেই পাওয়া যায়নি।
তাদের বাসার এক ভাড়াটিয়া জানান, সানির মা আজ সকালে বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন। এখনো ফেরেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সানির বাসার সামনের এক চায়ের দোকানদার জানান, তিনি সকাল ৬টায় দোকানে আসেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সানি বাসার নিচে নেমে চা খেয়ে আবার উপরে চলে যান। সকাল ৯টার দিকে সানি যখন তার বাসার ছাদে কবুতরকে খাওয়াচ্ছিলেন। তখন বাসার সামনে একটি পুলিশের গাড়ি আসে। সেখানে ১০-১২ জন পুলিশ ছিল। তারা গিয়ে সানিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।