‘বিস্ফোরণের পর তিন ভবন দূরে জঙ্গির দেহের বিভিন্ন অংশ’
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কলেজ রোডে ‘ছায়ানীড়ে’ অভিযানের সময় বোমা বিস্ফোরণে এক ‘জঙ্গি’র শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনটি ভবন দূরে একটি ছাদে বোমা বিস্ফোরণকারীর শরীরের বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে।
‘অ্যাসল্ট ১৬’ নামে অভিযানে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ছায়ানীড় নামের ওই বাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে এক নারীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পুলিশের দুই সদস্যসহ তিনজন।
অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘বোমাটি বিস্ফোরণের পর আমরা যখন পর্যবেক্ষণ করছিলাম, তখন দেখতে পাই ওই ভবন থেকে তিনটি ভবন দূরে ছাদের মধ্যে গিয়ে বিস্ফোরণকারীর দেহের বিভিন্ন অংশ পড়ে আছে। দাঁতের অংশ পড়ে আছে। ছিন্ন ভিন্ন অংশ পড়েছিল।’
সানোয়ার হোসেন আরো বলেন, ‘এরপর আমরা দেখতে পাই ভবনটির যে চিলেকোঠা ছিল, তা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে।’
এডিসি সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘তাদের কাছে একটি বড় রকমের বোমা ছিল। ধ্বংসযজ্ঞ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, সেটির ওজন তিন থেকে চার কেজি হবে। তারা অনেকটা পাজাকোলার মতো করে নিয়ে এসে সেটির বিস্ফোরণ ঘটায়। সেই সময় বোমা বহনকারীর পুরো শরীর নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তার শরীরের বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায়।’
অভিযানের বিষয়ে সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘অভিযানের আগে থেকেই আমাদের কাছে তথ্য ছিল, সেখানকার একটি বাড়িতে জঙ্গিরা অবস্থান করছে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে দুজন সদস্য বোমা বানাতে দ্ক্ষ। তাদের কাছে তিন থেকে চার রকমের শক্তিশালী বোমা ছিল। যার কারণে সোয়াট টিমকে ওই বাড়িতে প্রবেশের ক্ষেত্রে একটু সময় লেগেছিল। যখন ছাদের ওপর দিয়ে সোয়াট টিম প্রবেশ করতে থাকে, তখন সিঁড়ির কাছাকাছি পৌঁছা মাত্র তিন থেকে চারজন সদস্য সম্মিলিতভাবে একটা ধ্বনি দিয়ে পুলিশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।’
সীতাকুণ্ড কলেজ রোডের ছায়ানীড় বাড়িতে গতকাল বুধবার রাত ৯টার পর থেকে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এর আগে বিকেল ৪টা থেকে ছায়ানীড় ও সাধন কুঠির নামের দুটি বাড়ি ঘিরে রাখা হয়। পুলিশ ওই দুটি বাড়িতে অভিযান চালালে তাদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এরপর সেখানে জঙ্গিদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় প্রশাসন। এর পর থেকে র্যাব, পুলিশ ও সোয়াত সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে রাখার পরে অভিযান শুরু করে।
অভিযানের পর ‘জঙ্গি আস্তানা’ ছায়ানীড় ভবন থেকে এক শিশুর লাশ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হলো। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিশুর লাশটি পাওয়া যায়। তবে পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, নিহত চার জঙ্গির মধ্যে যে নারী ছিলেন, নিহত শিশুটি তাঁরই।