তামিমের বদলে যাওয়ার গল্প
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় এক দশক পার করে দিয়েছেন তামিম ইকবাল। দখল করেছেন সব সংস্করণে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডগুলো। তবে তামিমকে যেন আলাদা করে চেনা যাচ্ছে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ থেকে।
২০১৫ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত, আট বছর ধরে তামিম খেলেছেন ১৪১টি ওয়ানডে। চারটি শতক ও ২৮টি অর্ধশতকের ইনিংস খেলে করেছেন ৩৯৭১ রান। ব্যাটিং গড় মাত্র ২৮.৮৫। আর ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫টি ম্যাচ খেলে তামিমের সংগ্রহ ১৬০৭ রান। ব্যাটিং গড় ৫১.৮৩। এই ৩৫টি ম্যাচের মধ্যে তামিম খেলেছেন পাঁচটি শতরানের ইনিংস। ব্যাটসম্যান হিসেবে যে তিনি খুবই অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন, তা খুব ভালোমতোই টের পাওয়া যায় এই পরিসংখ্যান থেকে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম যেভাবে শতরানের ইনিংসটি খেলেছেন, তা আবারও মনে করিয়ে দেয় তামিমের বদলটা।
কীভাবে সেটা ঘটালেন, তা সম্প্রতি নিজেই জানিয়েছেন তামিম। আইসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের বাঁহাতি এই ওপেনার জানিয়েছেন যে, ব্যাটিংয়ের টেকনিক্যাল দক্ষতার চেয়ে মানসিক দৃঢ়তাই অনেক এগিয়ে দিয়েছে তাঁকে, ‘গত দুই বছরে আমি ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে খুবই ভালো সময় কাটিয়েছি। আমি বড় স্কোর খেলার দিকে মনোযোগ দিয়েছি, যেটা দলের জন্য কাজে লাগে। এটার দিকেই আমার দৃষ্টি ছিল। টেকনিক আমার জন্য কোনো ইস্যু ছিল না। ব্যাপারটা বেশি ছিল মানসিক ক্ষেত্রে। আমি নিজের খেলা নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলি। ক্রিকেটার-কোচ, সুযোগ পেলে বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গেও। আমার কথা বলতে ভালো লাগে। কারণ শেখার কোনো শেষ নেই। হাশিম আমলার মতো ব্যাটসম্যানের সঙ্গে কথা বললে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন। আমি শচীনের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি যেভাবে কথা বলেন, তাতে এমন কিছু আপনি পাবেন যা দিয়ে আপনি আরো ভালো ক্রিকেটার হয়ে ওঠা যায়।’
সাম্প্রতিক সময়ের এই বদলের পেছনে ফিটনেসেরও বড় ভূমিকা আছে বলে মন্তব্য করেছেন তামিম। তিনি বলেছেন, ‘ফিটনেস খুবই বড় ব্যাপার। আমি এদিকে অনেক মনোযোগ দিয়েছি। গত দুই বছরে আমি ১০ কেজি ওজন কমিয়েছি। এটা নিশ্চিতভাবেই অনেক সাহায্য করেছে।’
ওয়ানডে, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ড বেশ কিছুদিন ধরেই নিজের দখলে রেখেছেন তামিম। আগামীতেও তিনি যেন এই ভালো পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেন, সেই প্রত্যাশাই করবেন বাংলাদেশের সমর্থকরা।