সালাহর চোটে কাঠগড়ায় রামোস!
সার্জিও রামোস বোধহয় আর ভুলেও মিশরের বিমানে চড়তে চাইবেন না। পিরামিড দেখার ইচ্ছাটাও বোধহয় আর থাকবেনা রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়কের। থাকবেই বা কীভাবে, দেশটার সবচেয়ে বড় তারকাকে, স্বপ্নদ্রষ্টা যে চোটে পড়েছে তাঁর জন্যই!
লিভারপুল আর রিয়াল মাদ্রিদ লড়ছিল সমানতালে। ম্যাচের ৩১ মিনিট পর্যন্ত মাঠ ছিল উত্তাল। হঠাৎই কিয়েভ গেল থমকে, বিশ্বের অগণিত ফুটবলপ্রেমীদের চোখ মাঠের মাঝখানে। আঘাত পেয়ে যেখানে শুয়ে পড়েছিলেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ।
রামোসের সঙ্গে চলছিল সালাহর বল দখলের লড়াই। দুজনের হাত গেছে পেঁচিয়ে, শূন্যে ছিলেন দুজনই। যখন মাটিতে পড়লেন, রামোস ছিলেন সুস্থ কিন্তু সালাহ কাঁধে অনুভব করেছিলেন প্রচণ্ড ব্যথা।
সেই ব্যথাকে পাশ কাটিয়ে অবশ্য মিশরীয় ফরোয়ার্ড চেয়েছিলেন আবারও মাঠে নামতে। তবে, পারেননি! স্বপ্নের ফাইনালে মাঠে ছাড়তে হচ্ছে পুরো ম্যাচ না খেলেই। মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার সময় বিশ্বকাপে না নামতে পারার শঙ্কায়ও কি ছিলনা কান্নায় ভেঙ্গে সালাহর চোখে?
এমন এক ট্যাকলের পর রামোসের নিন্দায় ভেসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা পত্র-পত্রিকাগুলো। ‘ডেইলি মিরর’ পত্রিকার সাংবাদিক ডেভিড মডক তো বলছেন জেনেশুনেই কাজটা করেছেন রামোস, ‘সত্য কথা বলতে জঘ্ন্য কাজ করেছে রামোস। কঠিন আর ভয়াবহ একটা ফাউলে সে সালাহর রাতটা শেষ করে দিয়েছে, সম্ভবত বিশ্বকাপটাও। বিশ্বাস করুন, রামোস জানতো সে কি করতে যাচ্ছে।’
সালাহর দেশ মিশরেরই প্রাক্তন ফুটবলার মিদো বলছেন সালাহ লক্ষ্য করে রামোশের ফাউলটা ছিল ইচ্ছাকৃতই, ‘ফুটবল খেলাটা যারা বোঝে তারা সবাই-ই বলবে সালাহকে ইনজুরিতে ফেলতে রামোস অমন চেষ্টা ছিল ইচ্ছাকৃত।’
পুরো মৌসুম দলের সেরা সৈনিক সালাহর এভাবে ছিটকে যাওয়ায় সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা বোধহয় জার্গেন ক্লপেরই হল। এবারও জার্মান এই কোচের জেতা হলনা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা।
কোড অব কন্ডাক্টের ভয়ে হয়তবা সরাসরি কিছু বলেননি তবে বাজে ফাউলের শিকার হয়েছেন তাঁর শিষ্য এমনটা বলতেই হয়েছে ক্লপকে, ‘অনেকটা কুস্তিখেলার মত হয়েছে এই ফাউলটা। সালাহ নিজের কাঁধের ওপর যেভাবে পড়েছে এটাকে আমার ফাউল বলতেই হবে।’
সালাহর চোখের জলের পেছনে রামোসকে কারণ হিসেবে দাঁড় করাচ্ছেন অনেকেই। তবে, ডিফেন্ডার হিসেবে রামোসের দায়িত্বই যে প্রতিপক্ষের সবচেয়ে বড় তারকাকে আটকে রাখা- এটাও কিন্তু সত্য। ফলে, রিয়াল দলপতির পক্ষেও কথা বলছেন অনেকেই।
সে যাই হোক, যদি সত্যিই শিরোপা জিততে এমনটাই হয়ে থাকে রিয়ালের ‘রণকৌশল’, তাহলে কিন্তু মানতেই হচ্ছে ভীষণ সফল মাদ্রিদের ক্লাবটি। লিভারপুল দলের কাছে সালাহর মূল্য কি সেটা কিন্তু বেশ বোঝা গেছে মিশরীয় তারকার মাঠ ছেড়ে যাওয়ার পর। ছন্নছাড়া, পথহারা লিভারপুলকে কাঁদিয়ে কিয়েভের মাঠে রিয়াল মেতেছিল হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের উল্লাসে।