নুসরাত হত্যা, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি জেলা প্রশাসনের কমিটি
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ফেনী জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি তিন দফা সময় বাড়িয়েও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।
গত ২১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পি কে এম এনামুল করিম। ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে কমিটির প্রধান পি কে এম এনামুল করিম বলেন, তদন্তকাজ শেষ করা হলেও নানা ব্যস্ততায় প্রতিবেদন তৈরি এখনো সম্ভব হয়নি। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দিবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে নিহত রাফির স্বজনরা এরই মধ্যে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, নিপীড়নের ঘটনার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি অভিযুক্ত এস এম সিরাজ উদ দৌলার পক্ষ নিয়েছিলেন।
রাফির ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, গত ২৭ মার্চ রাফিকে যৌন নিপীড়ন করার ঘটনায় মামলা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘তদন্তদলের প্রধান একটি প্রশিক্ষণে জেলার বাইরে অবস্থান করায় কিছুটা দেরি হচ্ছে।’ অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন তৈরি করে গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফির ওপর যৌন হয়রানির দায়ে তাঁর মায়ের দায়ের করা মামলায় সিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে এমন সংবাদ দিলে ওই ভবনের ছাদে যান নুসরাত। সেখানে বোরকা ও নেকাব পরা চার-পাঁচজন তাঁকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় ওই সব দুর্বৃত্ত।
গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত।