ভারতকে ৩০৮ রানের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের
বিশ্বকাপের বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের কোয়ার্টার ফাইনালে জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৩০৩ রানের টার্গেট দিয়েছিল ভারত। তারপর দুই দলের প্রথম মুখোমুখি লড়াইয়ে এবার বাংলাদেশ ভারতের দিকে ছুড়ে দিয়েছে ৩০৮ রানের চ্যালেঞ্জ। দুই বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ৩০৭ রানে।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো শতরানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। কিন্তু এক ঘণ্টার বৃষ্টি আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ভালো বোলিং বাংলাদেশের স্কোরটা আরো বড় করতে দেয়নি। তবুও তামিম, সৌম্য ও সাকিব আল হাসানের অর্ধশতকে ভর করে বাংলাদেশ পেয়েছে লড়াই করার মতো স্কোর।
এবারই প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে ৩০০ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৩০০ রানের বেশি করল এই নিয়ে নবমবারের মতো। তবে ভারতের বিপক্ষে এবারই প্রথমবারের মতো ওভারপ্রতি ছয়ের বেশি রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১০ সালে করেছিল ২৯৬ রান।
ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ভারতীয় বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে তাঁরা রান সংগ্রহ করছিলেন একে অপরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। ১৩.৩ ওভার খেলে উদ্বোধনী জুটিতে জমা করেছিলেন ১০২ রান। কিন্তু চতুর্দশ ওভারে দুর্ভাগ্যবশত রানআউট হয়ে যান সৌম্য। সাজঘরে ফেরার আগে আটটি চার ও একটি ছয় মেরে করেছেন ৪০ বলে ৫৪ রান। তামিমও ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩০তম অর্ধশতক পূর্ণ করতে বেশি সময় নেননি। তামিমের অর্ধশতক পূর্ণ হওয়ার পর আসা বৃষ্টি ছন্দপতন ঘটিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। এক ঘণ্টার বৃষ্টি-বিরতির পর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ঘূর্ণিতে অল্প সময়ের মধ্যে তিনটি উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। ৬২ বলে ৬০ রান করে অশ্বিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে রোহিত শর্মার হাতে ধরা পড়েছেন তামিম। মুশফিকও আউট হয়েছেন একই কায়দায়। ১৪ রান করে। মাঝে লিটন আউট হয়েছেন এলবিডব্লিউ হয়ে। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডেতে তিনি করেছেন আট রান। পঞ্চম উইকেটে ৮৩ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে দিয়েছিলেন সাকিব ও সাব্বির রহমান।কিন্তু ৩৮তম ওভারে ৪১ রান করা সাব্বিরকে হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হয়ে যান সাব্বির। কয়েক ওভার পরে সাকিব আউট হন ৫২ রান করে। শেষপর্যায়ে নাসির হোসেনের ২৭ বলে ৩৪ ও মাশরাফির ১৮ বলে ২১ রানের সুবাদে স্কোরবোর্ডে ৩০৭ রান জমা করে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে ডানহাতি ব্যাটসম্যান লিটন দাস ও বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের। আঙুলের চোট পেছনে ফেলে মুশফিকুর রহিম উইকেটরক্ষণের দায়িত্ব পালন করবেন। বাংলাদেশ দল গড়েছে চার পেসার নিয়ে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে আছেন রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।
বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের আম্পায়ারিং বিতর্কের পর সীমিত ওভারের ম্যাচে প্রথমবারের মতো ভারতের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। পেশাদারত্বের পরিচয় দিয়ে দুই দেশের অধিনায়ক সে ঘটনাকে পাত্তা দিতে চাননি। কিন্তু বাংলাদেশের সেই আক্ষেপভরা হার তো সমর্থকরা সহজে মুছে ফেলতে পারেননি মন থেকে। আর সেটা বাড়তি উত্তাপ ছড়াচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ ঘিরে। একই সঙ্গে নিজেদের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার হাতছানি আছে বাংলাদেশের সামনে। পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার আত্মবিশ্বাসও হয়তো মানসিকভাবে এগিয়ে রাখবে স্বাগতিকদের।
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের যেকোনো একটি জিতলেই ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে এক ধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলে উঠে যাবে সপ্তম অবস্থানে। পূরণ হবে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার স্বপ্ন।