লতিফ সিদ্দিকীর আসন শূন্য ঘোষণা
টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর পদত্যাগপত্র সংসদে গৃহীত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এ মন্ত্রীর আসনটি শূন্য ঘোষণা করার কথা আজ বৃহস্পতিবার সংসদে জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সংবিধানের ৬৭-এর ২ ধারা অনুযায়ী লতিফ সিদ্দিকীর আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। এখন এ ব্যাপারে প্রকাশিত গেজেট নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানো হবে। তার পরই শূন্য আসনে উপনির্বাচনের ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন।
দশম সংসদের সপ্তম অধিবেশনে আজ মাগরিবের নামাজের পর ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর জানান, ‘দশম জাতীয় সংসদের টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী স্বীয় স্বাক্ষরযুক্ত পদত্যাগপত্র আমার কাছে পাঠিয়েছেন। আমি সেটি গ্রহণ করেছি।’
‘সংবিধানের ৬৭- এর ২ ধারা অনুযায়ী তাঁর পদত্যাগপত্র আমার কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আসন শূন্য হয়েছে।’ যোগ করেন স্পিকার।
গত মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে জাতীয় সংসদে নিজের বক্তব্য শেষ করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে নিজের পদত্যাগপত্রও জমা দেন তিনি।
গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করেন তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মোট ২১টি মামলা আমলে নেওয়া হয়। এর আগে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে তাঁকে অপসারণ করা হয়।
গত জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের পর আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। পরে ২ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাব পাঠান লতিফ সিদ্দিকী। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, সংসদ সদস্যপদ বাতিলের বিষয়ে শুনানি করতে নির্বাচন কমিশনের কোনো এখতিয়ার নেই। কেননা, তিনি এখনো আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক। দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করলেও তিনি নিজে দল থেকে পদত্যাগ করেননি বা অবসর নেননি। জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভোট দেননি, তাই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হয়নি।
আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্যপদ বাতিল প্রশ্নে ২৩ আগস্ট নির্বাচন কমিশনে শুনানি হয়। শুনানি শেষে লতিফ সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এ বিষয়ে শুনানি স্থগিত করার অনুরোধ করেছি। আমার পদত্যাগপত্রটি স্পিকারের কাছে জমা দেব। আমি বুঝতে পেরেছি, আমার নেতা চান না আমি এ নিয়ে আর আইনি লড়াই করি। আমি নেতার ভক্ত, তাঁর আদেশ মেনে আমি আর আইনি লড়াই করব না।’
শুনানির ঘটনার ৯ দিন পর লতিফ সিদ্দিকী পদত্যাগপত্র জমা দেন।