অপপ্রচার হয়েছিল : লতিফ
পবিত্র হজ পালন ও তাবলিগ জামাতের ব্যাপারে মন্তব্য নিয়ে অপপ্রচার হয়েছিল বলে দাবি করেছেন জাতীয় সংসদ থেকে সদ্য পদত্যাগকারী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। আজ শুক্রবার বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি করেন।
urgentPhoto
গতকালই জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংবিধানের ৬৭-এর ২ ধারা অনুযায়ী লতিফ সিদ্দিকীর আসন শূন্য ঘোষণা করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে নিজের বক্তব্য শেষ করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লতিফ সিদ্দিকী। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে নিজের পদত্যাগপত্রও জমা দেন তিনি।
গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করেন তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মোট ২১টি মামলা আমলে নেওয়া হয়। এর আগে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে তাঁকে অপসারণ করা হয়। সবশেষ সংসদ সদস্যের পদও হারান তিনি।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘সমষ্টি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমি তার প্রতি সম্মান দেখাচ্ছি। আমার ব্যক্তিমতের কারণে সংগঠন তো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না।’
তাহলে হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে মন্তব্য ভুল ছিল কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে টাঙ্গাইল-৪ আসনের সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘ভুল বা সঠিকের প্রশ্ন না। অপপ্রচার ছিল।’
নিয়ম অনুযায়ী এখন টাঙ্গাইল-৪ শূন্য আসনের ব্যাপারে প্রকাশিত গেজেট নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানো হবে। তার পরই শূন্য আসনে উপনির্বাচনের ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন।
এ উপনির্বাচন নিয়ে নিজের ভাবনার কথা বলতে গিয়ে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষ তো সংসদ সদস্য হয় না। ৩০০ জন সংসদ সদস্য হন। দীর্ঘদিন তো ছিলাম। এটা না থাকলে খুব যে অসুবিধা হয় তা তো মনে হলো না। মানুষের ভালোবাসাটা আমার কাম্য। আমি কিন্তু মানুষের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হইনি। নেত্রী যাঁকে সমর্থন দেবেন, আমি তাঁকেই সমর্থন দেব এবং আমাকে যাঁরা ভালোবাসেন তাঁদের বলব, তাঁকে সমর্থন দিতে।’
এ সময় আওয়ামী লীগের সাবেক এ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিব্রত হয়েছিলেন তাই তিনি আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন। সেটা হলো যান্ত্রিক দূরে সরানো। আমি মনে করি না, শেখ হাসিনা আমাকে অন্তর থেকে দূরে সরিয়েছেন।’
হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে মন্তব্যের জেরে গত জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের পর আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। পরে ২ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের চিঠির জবাব পাঠান লতিফ সিদ্দিকী। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, সংসদ সদস্যপদ বাতিলের বিষয়ে শুনানি করতে নির্বাচন কমিশনের কোনো এখতিয়ার নেই। কেন না, তিনি এখনো আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক। দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করলেও তিনি নিজে দল থেকে পদত্যাগ করেননি বা অবসর নেননি। জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভোট দেননি, তাই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হয়নি।
আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্যপদ বাতিল প্রশ্নে ২৩ আগস্ট নির্বাচন কমিশনে শুনানি হয়। শুনানির নয়দিন পর লতিফ সিদ্দিকী পদত্যাগপত্র জমা দেন।